সোনার পরে এ বার ধান-কেলেঙ্কারিতেও জড়াল প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নাম! বছর দেড়েক আগে সরকারি ধান কেনায় দুর্নীতির তদন্তের সময় জঙ্গলমহলের এক চালকল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীদের বেআইনি ভাবে আটক রেখে তাঁদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ভারতীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জঙ্গলমহলের এক চালকল মালিককে সিআইডি এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
২০১৬ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে লালগড়-সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের একটি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নামে খাদ্য দফতর ও সমবায় দফতর। ওই ঘটনায় মূল মামলাটি দায়ের হয়েছিল লালগড় থানায়। ভারতী নিজে তদন্তের দেখভালে ছিলেন। অভিযোগ, তদন্তের সূত্রে ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে ঝাড়গ্রামের এক চালকল মালিক-সহ তিনজনকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠান ভারতী। এরপর বেলিয়াবেড়া থানা ও লালগড় থানার তৎকালীন দুই অফিসারের সামনে ওই চালকল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীদের থেকে মোটা টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ।
ওই চাল কল মালিকের দাবি, ধান থেকে চাল করে দেওয়ার খরচ বাবদ ওই কৃষি সমিতির কাছে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে তাঁর ৩০ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল। কিন্তু ভারতী কোনও কথা শুনতে চাননি। তিনি উল্টে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকার দাবিতে ওই চালকল মালিক ও দুই ধান ব্যবসায়ীকে দিন চারেক বেলিয়াবেড়া থানায় বেআইনি ভাবে আটক রাখা হয়, ভারতীর ‘সহকারী’ সুজিত মণ্ডল তাঁদের প্রচণ্ড মারধর করেন বলেও অভিযোগ। শেষে ২৮ লক্ষ টাকায় রফা হয়। ধার করে সেই টাকা মিটিয়ে রেহাই পান চালকল মালিক। দু’জন ধান ব্যবসায়ীদের থেকেও ১০ ও ২০ লক্ষ টাকা করে আরও ৩০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। চাষিদের ওই টাকা দেওয়া হবে বলে লিখিয়ে নিলেও তা করা হয়নি। পরে সরকার চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেয়।
ওই চালকল মালিককেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। ঝাড়গ্রামের ওই চালকল মালিক এ দিন বলেন, “দেনা শুধতে গিয়ে ব্যবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে। গত পুজোয় কর্মীদের বোনাসও দিতে পারিনি।” জঙ্গলমহল রাইসমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভবতোষ মণ্ডলের অবশ্য বক্তব্য, “ঘটনাটি অল্পবিস্তর শুনেছিলাম। তবে ওই চালকল মালিক সংগঠনে অভিযোগ করেননি।”