Anubrata Mondal

‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কালি, উনি কি ঘুমোচ্ছিলেন?’ আইসি কাণ্ডের পর অনুব্রতের নিশানায় পুলিশ সুপার, আর কী বললেন কেষ্ট?

বোলপুরের আইসিকে কুকথা বলায় কয়েক দিন আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। তার রেশ কাটতে না-কাটতেই এ বার কেষ্টর নিশানায় বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ২০:৫৬
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

বোলপুরের আইসিকে কুকথা বলায় কয়েক দিন আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। তার রেশ কাটতে না-কাটতেই এ বার কেষ্টর নিশানায় বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ। তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘বীরভূম জেলায় এই ধরনের সংস্কৃতি আগে ছিল না। আমি মনে করি, এই পুলিশ সুপার আসার পর থেকেই এমন সংস্কৃতি শুরু হয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, এ রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী হলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

শনিবার সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতে কালি লাগানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি-তৃণমূলের সংঘাতও বাধে। এর পরেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে কালি লাগাচ্ছে। সেখান থেকে এসপি অফিস হচ্ছে কুড়ি হাত দূরে। উনি কি ঘুমোচ্ছিলেন?’’

অনুব্রত আরও বলেন, ‘‘আমরা আগে বিরোধী দলে ছিলাম। আমরা কোনও দিন জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বা কারও ছবিতে কালি লাগাইনি। আমরা বিজেপির কোনও ছবিতে কালি লাগাই না। এটা ভদ্রতা নয়। এই ধরনের পুলিশ সুপার থাকলে এই ধরনের নোংরামিই হবে!’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে কালি লাগানোর ঘটনার পরেই তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিজেপি নেতারা। প্রকাশ্যে বচসা এবং ধাক্কাধাক্কিও হয় বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা ও সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ধ্রুব-সহ একাধিক বিজেপি নেতা-কর্মীদের চ্যাংদোলা করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গ্রেফতারও করা হয় ধ্রুবকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধ্রুব-সহ বিজেপির মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তা সত্ত্বেও পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কেষ্ট। বলেছেন, ‘‘আগে অন্য পুলিশ সুপার থাকতে এ ধরনের নোংরামি, খুনখারাপি হত না। এই পুলিশ সুপার আসার পরে নাবালিকা উধাও থেকে সব কিছু হচ্ছে। দু’জন তৃণমূল নেতা খুন হয়েছে, তিন জন নাবালিকা নিখোঁজ হয়েছে।’’ এ বিষয়ে পুলিশের সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, মে মাসে বোলপুর থানার আইসি-কে ফোন করে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের মহিলাদের উদ্দেশে হুমকি ও কুকথা বলার অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রতের বিরুদ্ধে। সে মামলা এখনও চলছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে অনুব্রতকে ক্ষমাও চাইতে হয়।

তৃণমূল নেতৃত্ব অনুব্রতকে বীরভূম জেলা সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরেই আইসি কাণ্ড ঘটেছিল। তখন অনুব্রত স্রেফ দলের কোর কমিটির এক জন সাধারণ সদস্য ছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে আইসিকে কুকথা বলে বিতর্কে জড়িয়ে দলে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন অনুব্রত। গত ২১ জুলাই তৃণমূলের ধর্মতলার সমাবেশেও কেষ্ট অন্তরালে ছিলেন, যা নিয়ে জোর চর্চা হয় জেলায়। ঠিক তার পরেই বীরভূম যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে অনুব্রতের সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেন। পরে অনুব্রতকে কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। ঘটনাচক্রে, তার পর থেকেই অনুব্রতের প্রাসঙ্গিকতা আবার বাড়তে শুরু করেছে জেলার রাজনীতিতে। আবার স্বমহিমায় ফিরেছেন অনুব্রত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement