লড়াই: চার বছরের দুই যমজ সন্তানের সঙ্গে শুক্লাদেবী। নিজস্ব চিত্র
এ যেন কবর থেকে উঠে এল চার বছর আগের অভিযোগ!
পিত্তথলির জমা পদার্থ বের করতে ইআরসিপি-র পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ৩৮ বছরের তরুণ চিকিৎসক অমিত পাঁজাকে। ইআরসিপি পদ্ধতিতে গলব্লাডার, পিত্তথলি, লিভারে থাকা স্টোন বা জমা পদার্থ চিহ্নিত করে প্রয়োজনে বের করে আনা যায়। ১৩,৩১০ টাকার প্যাকেজে সেই প্রক্রিয়াটি করাতেই অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অমিতবাবু। টানা দু’মাস হাসপাতালে থাকার পরে যে দিন তাঁর মৃত্যু হল, সে দিন বিল দাঁড়িয়েছিল ২৭ লক্ষ টাকা!
অমিতবাবুর স্ত্রী চিকিৎসক শুক্লা কুণ্ডুর দাবি, গাফিলতির ফলে ইআরসিপি করার সময়েই তাঁর স্বামীর প্যাংক্রিয়াস গুরুতর জখম হয়। সেই অভিযোগ কোনও গুরুত্বই পায়নি স্বাস্থ্য দফতরে। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলও কোনও গাফিলতি খুঁজে পায়নি। এখন ফের বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েছেন শুক্লাদেবী। জানিয়েছেন, দুই যমজ সন্তানকে নিয়ে তাঁর লড়াই এখনও চলছে। এর জেরে ওই ঘটনা নিয়ে অবিলম্বে ফের তদন্ত শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শুক্লা জানান, ২৭ লক্ষ টাকার বিলের মধ্যে তিনি বিভিন্ন দফায় মিটিয়েছিলেন পাঁচ লক্ষ টাকা। বাকি প্রায় ২২ লক্ষ টাকা হাসপাতাল মকুব করে দেয়। মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্লাদেবী জানিয়েছেন, ‘‘হাসপাতালে দাঁড়িয়ে আমি চিৎকার করে বলেছিলাম, এর শেষ দেখে ছাড়ব। ওরা ভয় পেয়ে টাকা মকুব করেছিল।’’ অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, চার বছর আগের ওই ঘটনার কথা তাঁরা মনে করতে পারছেন না। যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে পুরনো রেকর্ড দেখে এ ব্যাপারে জানানোও তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
দিন কয়েক ধরে পেটে ব্যথা হওয়ায় মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছিলেন অমিতবাবু। আলট্রাসোনোগ্রাফি রিপোর্টে দেখা যায় তাঁর গলব্লাডারে পাথর রয়েছে, পিত্তথলিও খানিকটা মোটা। অমিতবাবুকে এমআরসিপি স্ক্যান করাতে বলেন মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসক। এমআরসিপি রিপোর্টের ভিত্তিতে অ্যাপোলোর নামী গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের কাছে ইআরসিপি করান অমিতবাবু।
কিন্তু ইআরসিপি-র পর থেকেই অবস্থার অবনতি হওয়ায় অমিতবাবুকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। তার পর আর তাঁকে সেখান থেকে বের করা যায়নি।