RG Kar Financial Irregularity

আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে অতীনের বয়ান নিল সিবিআই, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কী বললেন ডেপুটি মেয়র

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পাল্টা আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে। তিনি জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের তল্লাশি করার ‘বাহানা’ চাই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৫ ১৯:২৬
Share:

শুক্রবার সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি অতীন ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।

আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মামলায় শুক্রবার কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। বিকেল ৫টা নাগাদ তাঁর বাড়ি থেকে সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা বেরিয়ে যাওয়ার পরে অতীন জানান, তাঁর বয়ান নিয়েছে সিবিআই। আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতি নিয়ে প্রশ্ন ছিল তদন্তকারীদের। তিনি ওই সমিতির সদস্য হয়ে প্রায় তিন বছর বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। অতীন জানিয়েছেন, সেই নিয়েই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে। তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। ‘ষড়যন্ত্র’ কি না, সেই প্রশ্নে অতীন জানান, আধিকারিকেরা নিজেদের অধিকারে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে সাক্ষীর কাছে জানতে এসেছেন। যদিও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পাল্টা আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে। তিনি জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের তল্লাশির ‘বাহানা’ চাই। অফিসারেরা তাঁকে জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে ফোনে নির্দেশ পান তাঁরা।

Advertisement

আরজি করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর প্রকাশ্যে আসে আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি। অভিযোগ, হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। টেন্ডার ডাকার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। সেই নিয়ে শুক্রবার কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীনের শ্যামবাজারের বাড়িতে যায় সিবিআই। বিকেল ৫টা নাগাদ সিবিআই আধিকারিকেরা তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে অতীন বলেন, ‘‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারায় আমাকে বুধবার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয় বিধায়ক হওয়ার কারণে আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য ছিলাম। সেই নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল। আমি উত্তর দিয়েছি। লিপিবদ্ধ করে তাঁরা চলে গিয়েছেন।’’

অতীন জানিয়েছেন, কথা বলতে চেয়ে তাঁর কাছে ফোনও এসেছিল। কিন্তু প্রতারণার শিকার হতে পারেন ভেবে তিনি জানান, নোটিস এলেই কথা বলবেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই আমাকে জানায়, এই ঘটনায় ৫০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাকেও প্রশ্ন করা হয়েছে। নাগরিক হিসেবে সহযোগিতা করা আমার কর্তব্য।’’ কী নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য হিসেবে তিন-চারটে বৈঠকে যোগ দেওয়া ছাড়া কোনও ভূমিকা ছিল না। সেগুলি বলেছি।’’ রোগী কল্যাণ সমিতিতে তাঁর ভূমিকা কী ছিল, এর পরে তা-ও জানিয়েছেন অতীন। তিনি বলেন, ‘‘রোগী কল্যাণ সমিতিতে আমার ভূমিকা সীমিত ছিল। বছরে তিন-চারটে বৈঠক হত। আমার কাজ ছিল তাতে যোগদান করা। ২০২২ সাল থেকে সমিতির বৈঠক শুরু হয়। ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ১২টি বৈঠক হয়েছে। তার মধ্যে ৮-১০টি গিয়েছি।’’ অতীন আরও জানান, আরও জনপ্রতিনিধি সমিতির সদস্য ছিলেন। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না, তিনি জানেন না। রোগী কল্যাণ সমিতির কার্যকারিতা কী, তা-ও তিনি সিবিআই আধিকারিকদের বলেছেন বলে জানান অতীন।

Advertisement

সিবিআইয়ের হানা কি ষড়যন্ত্র? অতীন বলেন, ‘‘সিবিআই বাড়িতে এসেছে বলে আমার খেদ নেই। আমার রাজনৈতিক চরিত্র কী, সকলে জানেন। ১৫ বছর ধরে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সামলাচ্ছি। কেউ আমার দিকে আঙুল তুলতে পারেনি।’’ কলকাতার মেয়র যদিও এই নিয়ে দিল্লির দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যত নির্বাচন আসবে, তত ওরা ভরসা করবে ইডি, সিবিআইয়ের উপরে। আমরা ভরসা করব মানুষের উপরে। এর আগে আমার বাড়িতেও সিবিআই তল্লাশি চলেছে সারাদিন। আজ অতীনের বাড়িতে হয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘অপব্যবহার’ করা হচ্ছে। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমাকে সিবিআই অফিসারেরা বলেছেন, দিল্লি থেকে ফোন আসে। আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা জানি, কিছু পাব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement