anandabazar digital

Bachhorer Best by Anandabazar Online: ভিন্ন রাজনীতি, ভিন্ন মত ভুলিয়ে, সকলকে ‘বেস্ট’ মঞ্চে মিলিয়ে দিল আনন্দবাজার অনলাইন

আনন্দসন্ধ্যায় উপস্থিত এক অতিথির কথায়, ‘‘যে ভাবে আনন্দবাজার অনলাইন একই মঞ্চে সবাইকে মিলিয়ে দিল, তা সাম্প্রতিক কালে বিরল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২২ ০৩:৩১
Share:

একসঙ্গে কুণাল ঘোষ, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

কেউ রাজ্যের শাসক দলের হয়ে আগ্রাসী উচ্চারণে লোকসভায় ঝড় তোলেন। কেউ কেন্দ্রের শাসক দলের তরফে রাজ্যের মাটিতে পদ্ম ফোটাতে দিনরাত এক করেন। কেউ আবার এই দুয়েরই ঘোর বিরোধী— বিকল্প পথের কথায় নাছোড়। ২৪ ঘণ্টা, ৩৬৫ দিন, তাঁরা রাজনীতিটাই করেন। কিন্তু শুক্রবার, মিলনমেলা প্রাঙ্গনের ঢিল ছোড়া দূরত্বে, পাঁচতারা আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে ‘বছরের বেস্ট’ সন্ধ্যা যেন প্রকৃত অর্থেই মিলনমেলা। লাল, গেরুয়া কিংবা নীল-সাদা— ভিন্ন রাজনীতি, ভিন্ন মত ভুলিয়ে, সব শিবিরের সক্কলকে মিলিয়ে দিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

প্রথম বছর, ভরা অতিমারির আবহেও ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠান নজর কেড়েছিল। করোনা থিতিয়ে যেতেই, দ্বিতীয় বছর আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট একাদশ’-এর আসর যেন ডানা মেলে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে উড়ে গেল দিগন্তের পথে। আর সেই উড়ানে মিলেমিশে একাকার রাজনীতির ভিন্ন মেরুর নেতানেত্রী থেকে রুপোলি পর্দা, শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতির ‘আসল’ তারকারা। শুক্রবারের সন্ধে সব অর্থেই ‘বেনিয়াসহকলা’র বর্ণচ্ছটায় উজ্জ্বল। বহুরঙা রামধনু।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে আলাপচারিতায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র।

অনুষ্ঠান কক্ষে বিরল ফ্রেমে ধরা পড়লেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে হাসি মুখে শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখে কে বলবে, একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ের সময় থেকে কুণাল বনাম শোভন-বৈশাখী তরজা রাজ্য রাজনীতির অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল!

Advertisement

অনুষ্ঠানে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

তেমনই বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়ার সঙ্গে আলাপচারিতায় মাততে দেখা গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে। ঘটনাচক্রে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে শিশিরের অন্যতম পরিচয় ছিল সিপিএম ঘনিষ্ঠ হিসেবেই। পুরনো সেই আলাপই যেন ঝালিয়ে নিলেন দুই নেতা।

বিজেপির অশোক ডিন্ডা আর তৃণমূলের মনোজ তিওয়ারি মগ্ন কোন আলোচনায়? রাজনীতি নয়, নির্ঘাত ক্রিকেট! ঝলমলে সন্ধের দীপ্তি বহু গুণ বাড়িয়ে হাজির ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কন্যা সুচেতনা ভট্টাচার্যও।

উপস্থিত এক অতিথির কথায়, ‘‘যে ভাবে আনন্দবাজার অনলাইন একই মঞ্চে সবাইকে মিলিয়ে দিল, তা সাম্প্রতিক কালে বিরল। রাজনৈতিক চাপানউতর ভুলে যে ভাবে পাশাপাশি বসে বা দাঁড়িয়ে গল্পে মাতলেন সকলে, সেটা দেখে সত্যিই ভাল লাগল।’’

এক ফ্রেমে অশোক ডিন্ডা, ঝুলন গোস্বামী, সৃঞ্জয় বসু এবং মনোজ তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র।

এই সুরের প্রতিধ্বনি এসেছিল মঞ্চ থেকেও। সঞ্চালক বলছিলেন, ‘‘মেলালেন তিনি মেলালেন!’’

সত্যিই মিলল। পাঁচতারার তারকাখচিত সন্ধ্যায় দেখা গেল দিল্লির অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায় সঙ্গে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে। তাঁদের সঙ্গে আলাপে মাতলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগ্য সঙ্গতে শিল্পপতি চন্দ্রশেখর ঘোষ, সাংসদ মহুয়া, কবি শ্রীজাত। বস্তুত তাল, লয়ের সঙ্গে কবির পরিচয় যে প্রাচীন।

শুক্র সন্ধ্যায় গ্ল্যামারের বর্ণচ্ছটায় স্পষ্ট ছিল চিরন্তন বৈচিত্রের ঐক্য। ভিন্ন মতের, ভিন্ন জগতের, এক আধারে মিলেমিশে যাওয়ার ইতিবৃত্ত। ছায়াছবি জগতের প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, পাওলি দাম, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, অরিন্দম শীলের সঙ্গে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল যেমন মিশে গেলেন, তেমনই সুরের জগতের জয় সরকার, লোপামুদ্রা মিত্রকেও দেখা গেল হাসিমুখে সেই আড্ডা-গঙ্গায় ডুব মারতে। শিল্পপতি মায়াঙ্ক জালান, সঞ্জয় বুধিয়া, হর্ষ নেওটিয়ার পাশাপাশি সংবাদ জগৎ থেকে সম্পাদক সৃঞ্জয় বসুরাও ছিলেন সেই বিরল মিলনমেলায় স্বমহিমায় ভাস্বর। দিনের শেষে, অনুষ্ঠান শুরুর লগ্নে উচ্চারিত সেই বাক্যবন্ধই যেন আরও মূর্ত হয়ে ধরা দিল, মেলালেন, তিনি সত্যিই মেলালেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন