তখনও জ্বলছে আগুন। বর্ধমান স্টেশন লাগোয়া বাজেপ্রতাপপুরের রেল কলোনি এলাকায় উদিত সিংহের তোলা ছবি।
রাত দেড়টা। আচমকা বাসিন্দারা টের পেলেন আগুন লেগেছে ঘরে। তখনও তাঁরা বুঝতে পারেননি চোখের সামনে এ ভাবে পুড়ে খাক হয়ে যাবে আশেপাশের ঝুপড়িগুলো। শনিবার বর্ধমান স্টেশন লাগোয়া বাজেপ্রতাপুরের রেল কলোনির ঘটনা। প্রশাসনের তরফে জানানো গিয়েছে, আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে প্রায় ৬০টি ঝুপড়ি। কোনও প্রাণহানি না হলেও নিত্য প্রয়োজনীয় কোনও জিনিসপত্রই বাঁচানো যায়নি দাবি বাসিন্দাদের।
বাসিন্দারা জানান, তাঁরাই প্রাথমিক ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বদলে আশেপাশের ঝুপড়িগুলির মধ্যেও তা ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধরার খবর পেয়ে আধ ঘণ্টার মধ্যে বর্ধমানের দমকল কেন্দ্র থেকে ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। খানিক বাদে ভাতার ও পানাগড় থেকে দমকলের একটি করে ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। ৬টি ইঞ্জিনের প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় অগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে। বর্ধমান থানা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
বাসিন্দাদের দাবি, আগুনের গ্রাস থেকে ঘরের জিনিসপত্র কিছুই প্রায় বাঁচানো যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সুমন সিংহ বলেন, ‘‘দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে পড়ে। ঘরের সব কিছু ছাই হয়ে গিয়েছে।’’ একই বক্তব্য নমিতা সাউ নামে এক বাসিন্দারও। তাঁর কথায়, ‘‘সকলের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। সব ছাই হয়ে গেল চোখের সামনে।’’
আগুন ধরার প্রাথমিক কারণ হিসেবে শর্ট সার্কিটকেই দায়ী করেছেন দমকল ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। দমকলের কর্মীদের বক্তব্য, শুকনো ও গরম আবহাওয়ার কারণে খুব দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তা ছাড়া ঝুপড়িগুলির কাঠামো বাঁশ, ত্রিপল, খড়ের মতো দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি বলে ধারণা দমকল কর্মীদের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
শনিবার রাতে ও রবিবার সকালে বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে যান। ক্ষতিগ্রস্তদের থাকার ব্যবস্থা ও আর্থিক সাহায্য করার বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে পুরসভার তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।