গুসকরার পরে কাটোয়া।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়তে বাড়তে গুসকরায় পুরভবনের মধ্যেই এক কাউন্সিলর প্রকাশ্যে চুল টেনে চড় মেরেছিলেন আর এক মহিলা কাউন্সিলরকে। এ বার কাটোয়ায় পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এক মহিলা কাউন্সিলরকে কটূক্তি, গালিগালাজের অভিযোগ উঠল আর এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাসুদা খাতুনের অভিযোগ, পুরসভায় অবৈধ কাজকর্মের খতিয়ান অন্য সদস্যদের সামনে তুলে ধরতেই সংযম হারান ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুর। তারপরেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার প্রদেশ তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সি ও জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসকে ই-মেল করে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। কাটোয়া থানাতেও শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ করেছেন তিনি (ডায়েরি নং ১৩৬০)। যদিও শ্যামলবাবুর দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই মিথ্যা কুৎসা করা হচ্ছে তাঁর নামে।
দিন পনেরো আগেই দুর্নীতি ও উন্নয়নের কাজে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে পুরপ্রধান অমর রামকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন পুরসভার ১৩ জন কাউন্সিলর। তাঁদের দাবি ছিল, পুর এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে। উন্নয়নের কাজে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। দু-তিনটি ওয়ার্ডছাড়া উন্নয়নের কাজও নিম্ন মানের হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। বেশ কিছু আর্থিক অনিয়ম সামনে এসেছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। এ ছাড়ও পুর-নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে কর্মী নিয়োগ, পুর-এলাকায় ‘মিশন নির্মল বাংলা’ সফল না হওয়ার কথাও ছিল চিঠিতে।
এ দিনও পুরসভার বৈঠকে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন কাউন্সিলরেরা। মাসুদা বলেন, ‘‘শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণে মদত দেওয়া ও সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে সিপিএম কর্মীদের পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগ করছেন পুরপ্রধান। এ নিয়ে বলতে গেলেই পুরপ্রধানের হয়ে শ্যামলবাবু আমায় গালিগালাজ করেন।’’ তাঁর আরও দাবি, বৈঠকে পুরপ্রধান বলেন, ‘তুমি যাকে খুশি অভিযোগ করো, যতদিন আছি আমি যা ইচ্ছা করব।’
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, একেই পরিমিত অর্থ নেই পুরসভার তহবিলে। তার উপর দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের প্রসঙ্গ তোলায় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝামেলা লেগে গিয়েছে পুরপ্রধানের। যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি অমর রাম। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা সভাপতি।