বোমাবাজির পরে বন্ধই রইল কেন্দ্র

২৪ ঘণ্টা আগেই বোমা পড়েছিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে, ছড়া-শেখা শিশুদের সামনেই। কোনও রকমে কর্মীদের তৎপরতায় রক্ষা পেয়েছিল শিশুরা। তার পরে, শনিবার সেই বারাবনির খোসনগরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি আর খোলেনি।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

বারাবনি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

দুই চিত্র: শনিবার বন্ধই রইল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ডান দিকে, চালু উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

২৪ ঘণ্টা আগেই বোমা পড়েছিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে, ছড়া-শেখা শিশুদের সামনেই। কোনও রকমে কর্মীদের তৎপরতায় রক্ষা পেয়েছিল শিশুরা। তার পরে, শনিবার সেই বারাবনির খোসনগরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি আর খোলেনি। দেখা মেলেনি কোনও শিশুরও। বন্ধ ছিল, একই চত্বরে থাকা খোসনগর প্রাথমিক স্কুলও।

Advertisement

শুক্রবার ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ফিরোজা খাতুন, বিকিন মুর্মু ও বুলু বাউরিদের তৎপরতায় রক্ষা পায় শিশুরা। ওই ঘটনার পরে ফিরোজারা জানিয়েছিলেন, অঙ্গনওয়াড়ি বন্ধ রাখা হবে না। তবে এ দিন তা বন্ধ কেন? ফিরোজা জানান, এ দিনও তিনি সকাল ৯টা নাগাদ কেন্দ্রে এসেছিলেন। কয়েক জন অভিভাবকদের ডেকে তিনি জিজ্ঞাসাও করেন, ছেলেমেয়েদের এ দিন পাঠাবেন কি না। তবে ফিরোজার অভিজ্ঞতা, ‘‘মাত্র চার জন অভিভাবক এসেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র খোলার দরকার নেই। তার পরে আমি সিডিপিও-কে (বারাবনি) ফোন করে বিষয়টি জানাই। তিনিও জানান, এ দিন কেন্দ্র খোলার দরকার নেই।’’

কিন্তু অভিভাবকেরা কেন এ দিন ছেলেমেয়েদের পাঠালেন না ওই কেন্দ্রে? গ্রামেরই বাসিন্দা, কয়েক জন শিশুর অভিভাবক জিতেন বাউরি, সনৎ বাউরি, উজ্জ্বল বাদ্যকরেরা জানান, সকাল থেকে ফের খবর মিলছিল, খোসনগরের কয়েক জন ডাম্পারের মালিক মদনপুর খোলামুখ খনিতে কয়লা নিতে গেলে মদনপুরের বাসিন্দারা বাধা দিয়েছেন। তা নিয়ে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। জিতেনবাবুর কথায়, ‘‘ওই খবরের পরে ভয়ে আর ছেলেমেয়েদের অঙ্গনওয়াড়িতে পাঠাইনি। ফের যদি হামলা চলে। ২৪ ঘণ্টা আগের ঘটনায় আতঙ্কের রেশ কাটেনি ফিরোজারও। তাঁর কথায়, ‘‘প্রায় ৪০টা বাচ্চা ছিল ওই সময়ে। যদি কারও ক্ষতি হত, এই ভেবেই রাতে ঘুম হয়নি।’’

Advertisement

শুক্রবার, ঘটনার দিন খোলেনি খোসনগর প্রাথমিক স্কুলও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল মাজি বলেন, “ওই দিন পৌনে ১১টা নাগাদ আমরা চার জন শিক্ষক স্কুলে আসি। বোমাবাজি দেখে গ্রামবাসীই স্কুল খুলতে নিষেধ করেন। শনিবারেও অভিভাবকেরা কোনও পড়ুয়াকে স্কুলে পাঠাতে না চাওয়ায় স্কুল পরিদর্শকের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে পরিদর্শককে পাইনি। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্কুল না খোলারই পরামর্শ দেন।’’ সিডিপিও অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কর্মীকে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি।’’ একই কথা জানান স্কুল পরিদর্শক

অক্ষয় ভট্টাচার্যও।

তবে অন্য দিনের মতোই এ দিনও খুলেছিল খোসনগর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। শুক্রবার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র লক্ষ করে ঢিল ছোড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স মনোয়ারা খাতুন বলেন, “সাহস করেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলেছি। আশাকর্মীরাও কাজে এসেছিলেন।’’ আশাকর্মী নীলুফার খাতুন, কবিতা মণ্ডলদের বক্তব্য, ‘‘ভয় তো আছেই। কিন্তু, কাজটা তো করতে হবে। ঘরে বসে থাকা যায় না। তবে পুলিশ-প্রশাসন এলাকার এই সমস্যার সমাধান করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন