এখানেই ভিড় জমান ক্রেতারা। দুর্গাপুর বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র।
হঠাৎ আগুন লাগলে ঘিঞ্জি গলিপথ দিয়ে দমকল যাওয়ার জায়গা নেই। শুধু তাই নয়, বহু দোকানে পলিথিনের ছাউনির নীচেই চলছে জিনিসপত্র বেচাকেনা। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারগুলি কার্যত জতুগৃহ হয়ে রয়েছে বলে ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ।
শহরের ব্যস্ত এলাকা বেনাচিতি বাজারে প্রধান রাস্তার দু’দিকে গজিয়ে উঠেছে অজস্র দোকান। রয়েছে বহু গলিপথ। বাসিন্দারা জানান, বহু দোকানেই রয়েছে পলিথিনের ছাউনি। বাজারের পাশেই রয়েছে বসতি এলাকা। দমকল আধিকারিকরা জানান, গলিপথে ঢোকার কোনও উপায় নেই। যা পরিস্থিতি তাতে আগুন ধরলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যবসায়ীরাও। এই বাজারেই প্রতিদিন পোশাকের ডালি নিয়ে ব্যবসা করতে বসেন নিত্যানন্দ দুবে নামে এক বিক্রেতা। তাঁর কথায়, ‘‘বাজারের যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘটতে পারে। ঝুঁকি নিয়েই কারবার করতে হয়।’’
একই হাল দুর্গাপুর বাজারেও। এখানেও বহু দোকানে পলিথিনের ছাউনি রয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট পার্কিং জোন না থাকায় বাজারে ঢোকার মুখে ক্রেতারা গাড়ি, মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে রাখেন। আগুন ধরলে দমকলের ইঞ্জিনকে বাজারে ঢুকতে বেগ পেতে হবে বলে জানান ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁদের কথায়, ‘‘গরমে আগুন ধরার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।’’ মামরা বাজারের মূল রাস্তার দু’পাশেও রয়েছে বহু দোকান। বাজারের গলিপথগুলি দিয়ে দমকলের ইঞ্জিন তো দূর, মোটরবাইক নিয়ে যেতে গেলেও যথেষ্ট বেগ পেতে হয় বলে জানান ক্রেতারা। দমকল আধিকারিকদের শঙ্কা, মূল রাস্তা থেকে দোকানগুলি এত দূরে যে আগুন ধরলে জলের পাইপও পৌঁছবে না।
দমকল আধিকারিকদের দাবি, পলিথিনের মতো দাহ্য পদার্থের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। তরুণ দাসের মতো শহরবাসীদের অভিযোগ, ‘‘নজরদারির অভাবেই বাজারগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বাজারগুলিতে মাঝেসাঝেই অভিযান চালানো হয়।’’
সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ব্যবসায়ীরাও। দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি চন্দন দাস বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে বহুবার বিভিন্ন স্তরে কথাবার্তা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধান অধরা।’’ বিভাগীয় দমকল আধিকারিক তুষারকান্তি সেন জানান, প্রতি বছর ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল প্রচার অভিযান চালানো হয়। তবে এ বার ভোট থাকায় তা সম্ভব হয়নি। ফের তা শুরু করা হবে।