Coronavirus

হচ্ছে না নববর্ষের উৎসবও

পয়লা বৈশাখের দিনটিতে দোকানে দোকানে লক্ষ্মী, গণেশের পুজো করাই রীতি। তার পরে হয় হালখাতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০২
Share:

বাংলা নববর্ষের আগের দিন, সোমবার ভিড় নেই দুর্গাপুর বাজারে। নিজস্ব চিত্র

দোকানের শাটার আংশিক খুলে ভিতরে ঢুকেছিলেন সোমবার আসানসোলের স্বর্ণব্যবসায়ী সোমনাথ আচার্য। তা দেখে এক পুলিশকর্তা চলে আসায় তিনি বলেন, ‘‘আজ, পয়লা বৈশাখ। দোকানে নিয়ম রক্ষার পুজোটুকু করতে চান। তাই সামান্য ঝাড়পোঁছ করতে এসেছেন।’’ এর পরে ওই পুলিশকর্তা সতর্ক করেন, কোনও ভাবেই দোকানে যেন জটলা না হয়।

Advertisement

পয়লা বৈশাখের দিনটিতে দোকানে দোকানে লক্ষ্মী, গণেশের পুজো করাই রীতি। তার পরে হয় হালখাতা। বিকেলে অতিথিদের দেওয়া হয় নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির বাক্স। কিন্তু এ বার সে সব হবে না বলে জানালেন পোশাকের ব্যবসায়ী বরাকরের বাসিন্দা রামমোহন ভড়। তিনিও বলেন, ‘‘এ বার শুধু সকাল সকাল নিয়ম রক্ষার পুজো সেরে নেওয়া হবে। নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ছাপাতে পারিনি।’’ প্রথমে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ায় ভেবেছিলেন অক্ষয় তৃতীয়াতে হালখাতা সারবেন। কিন্তু আরও ১৫ দিন ‘লকডাউন’ ঘোষণায় সে সব মাটি হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন, বার্নপুরের এক ব্যবসায়ী ভক্ত দত্ত।

বাংলা ও ইংরেজি, এই দু’টি নববর্ষের অপেক্ষায় থাকেন শহরের ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ী বিকাশ মাহাতা। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বাংলা নববর্ষে খুব কম হলেও এক লক্ষ ক্যালেন্ডারের বরাত পেতাম। এ বার একটিও পাইনি। কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হওয়ায় হাতেও কোনও কাজ নেই।’’ চিন্তায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরাও। মৃৎশিল্পী সুকুমার পাল জানান, এ সময় ছোট থেকে বড় সব দোকানেই লক্ষ্মী, গণেশের পুজো হয়। এ বার মূর্তি তৈরির বরাত মেলেনি। অক্ষয় তৃতীয়াও মাটি হতে বসেছে।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে এই দিনে মাটির ভাঁড় ও গ্লাসের চাহিদা বেড়েছে। এ বারও তার অন্যথা হবে না ভেবেছিলেন কুলটির ঝনকপুড়ার ব্যবসায়ী লক্ষ্মী কুম্ভকার। দেখা গেল, বাড়ির উঠোনে রোদে শুকোতে দেওয়া হয়েছে ভাঁড় ও গ্লাস। তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কেউ বায়না করে যাননি। পোড়ানোর কয়লা কিনতে পারছি না। খরচের ঝুঁকি নিতে ভয় করছে। তাই এ ভাবেই ফেলে রেখেছি।’’

তাঁদের আশ্বস্ত করে চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত, শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্যরা বলেন, ‘‘বৃহত্তর স্বার্থে এই ‘লকডাউন’। মানুষজন সুস্থ থাকলে আগামী বছর নববর্ষের উৎসব পালন করা যাবে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement