বধূকে বেঁধে মার, অভিযুক্ত বিজেপি নেতা 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ির ওই বধূর সঙ্গে পড়শি যুবক গঙ্গা বাগদির পরকীয়া ছিল। গত শনিবার বুদবুদে ওই যুবকের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়েও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর রাম ও স্থানীয় বিজেপি নেতা মানিক বাগদি তাঁদের ফিরে আসতে বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৩
Share:

এক যুবতীকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে মাথার চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গলসির সাটিন্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের খানা জংশন এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, স্থানীয় বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য ও দলের এক নেতার মদতেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও অভিযোগ মানেননি দুই নেতা। তাঁদের দাবি, পুরোটাই তৃণমূলের চক্রান্ত।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ির ওই বধূর সঙ্গে পড়শি যুবক গঙ্গা বাগদির পরকীয়া ছিল। গত শনিবার বুদবুদে ওই যুবকের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়েও গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর রাম ও স্থানীয় বিজেপি নেতা মানিক বাগদি তাঁদের ফিরে আসতে বলেন। রবিবার তাঁরা ফিরে এলে বিকেলে ওই দুই নেতার উপস্থিতিতে ওই যুবতীকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

গলসি থানায় দায়ের করা অভিযোগে ওই বধূ যদিও জানিয়েছেন, গঙ্গা তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাঁকে। গ্রামে ফিরলে মারধর করার পাশাপাশি ঘুঁটের মালা পরিয়ে গোবরজল ঢেলে দেওয়া হয় তাঁর গায়ে। চুলও কেটে দেওয়া হয়। পুরোটাই করেন গঙ্গার স্ত্রী, মা ও বৌদি। তবে বিজেপি নেতা মানিকবাবুর আত্মীয় হওয়ায় গঙ্গাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও তাঁর দাবি। ওই যুবতীর আরও দাবি, তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে ঘটনার বিষয়ে কোথায় অভিযোগ না জানানোর জন্যে শাঁসানো হয়। এমনকি, অভিযোগ জানালে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ জানান ওই যুবতী। অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ গঙ্গার স্ত্রী সোনালী বাগদি ও বৌদি মালতী বাগদিকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

ওই বধূ পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কাজে যাওয়ার পথে গঙ্গা তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিজেপি নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যের কথায় ফিরে এলে মারধর করা হয়। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অভিযুক্ত বিজেপির নেতাদের দাবি, তৃণমূলের চক্রান্তের শিকার তাঁরা। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমাদের পাড়ার ঘটনা। তাই পাড়ার লোকেদের সঙ্গে গঙ্গা ও ওই বধূকে আনতে গিয়েছিলাম। সংসার দুটো বাঁচবে ভেবেই গিয়েছিলাম। তবে বাড়ি ফিরিয়ে আনার পরে কী হয়েছে আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করা হয়েছে।’’ মানিকবাবুও বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েতে তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি সরে গিয়েছে। তাই মিথ্যা মামলায় আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই।’’

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির দাবি মানতে নারাজ। জেলা পরিষদের সদস্য সুভাষ পুঁইলে বলেন, ‘‘বিজেপি কেমন, মানুষ তা বুঝে গিয়েছে। ফাঁসাতে হবে না। তাদের কর্মে তাঁরাই ফেসে গিয়েছে। আমরা চাই অভিযুক্তরা কঠিন শাস্তি পাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন