Bardhaman

অভিমানেই কি দল ছাড়ার চিঠি শ্যামলের

নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি, কার্যত রাজনীতির মাঠে সে ভাবে না থেকেই জেলা সভাপতির পদে বসানো হয় অভিজিৎ তা-কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ০৮:১৭
Share:

দল ছাড়ার কথা বলে চিঠি। প্রতীকী চিত্র।

নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দল থেকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে জেলা সভাপতিকে চিঠি দিলেন বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি শ্যামল রায়। সোমবার বিকেলে ওই চিঠির প্রতিলিপি তিনি রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা ইনচার্জ, রাঢ়বঙ্গ জ়োনের নেতৃত্বকেও পাঠিয়েছেন বলে দাবি। দলের একাংশের দাবি, এই ঘটনায় বর্ধমান সদরে বিজেপির অন্তর্কলহ ফের প্রকাশ্যে এল।

Advertisement

বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, ‘‘চিঠি পেয়েছি। কার উপরে অভিমানে এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বুঝতে পারছি না। বাইরে আছি, ফিরে গিয়ে কথা বলব।’’ একই কথা বলেন রাঢ়বঙ্গে বিজেপির নেতা, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও। তাঁর দাবি, ‘‘চিঠি দেখেছি। বাইরে আছি। ফিরে গিয়ে কথা বলব।’’

দলের নেতৃত্বকে দেওয়া চিঠিতে শ্যামল দাবি করেছেন, ‘দলের ভোট ৪ শতাংশ, তখন থেকে আমি দলের কাজে যুক্ত রয়েছি। এখন ৩৮ শতাংশ ভোট পাওয়ায় দলের সুদিন। এখন দলের আমার প্রয়োজন নেই। সে জন্য সসম্মানে দল থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম’। তাঁর সংযোজন, ‘আমরা এখন দলের সম্পদ নই। যখন সম্পদ হব, তখন আবার দেখা হবে।’ ১৯৯৭ সালে গেরুয়া ছাত্র সংগঠন এবিভিপি করতেন শ্যামল। পরে শহরের ওয়ার্ড কমিটির সদস্য হন। ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত জেলার যুব সভাপতিও ছিলেন। তার পরে সম্পাদক ও সহ-সভাপতি হন। ভাতার, বর্ধমান উত্তর, আউশগ্রাম বিধানসভার পর্যবেক্ষকও ছিলেন। দলের একটি অংশের দাবি, শনিবার রাতে জেলা নেতৃত্বের কথায় ‘অপমানিত’ হয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন শ্যামল।

Advertisement

নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি, কার্যত রাজনীতির মাঠে সে ভাবে না থেকেই জেলা সভাপতির পদে বসানো হয় অভিজিৎ তা-কে। বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলের আক্রমণে দলের কর্মী-সমর্থকেরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেও, সভাপতিকে তাঁদের পাশে দেখা যায়নি। তাতে দলের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। চিঠিতেও তারই প্রতিফলন। শ্যামল লিখেছেন, ‘যারা অত্যাচার করেছে, যারা ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত করিয়েছে, তারা ক্ষমতার শীর্ষে বসুক!’ বর্ধমান সদরের সাংগঠনিক হাল নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বরাবরই চিন্তিত। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্তর্কলহের জেরে দলের জেলা কার্যালয় ভাঙচুর হয়। জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীকে সরিয়ে অভিজিৎ তা-কে আনা হয়। তার পরেও কোন্দল থামেনি। জেলা কমিটির অনেকেই ‘নিষ্ক্রিয়’, দাবি দলের একাংশের। আবার, অনেক বিজেপি নেতা দল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। কোন্দলের জেরে বুথ পর্যায়ে সংগঠন জোরদার করতে পারেনি বিজেপি। সব বুথে কমিটিও গঠন হয়নি। জেলার ২১৫টি পঞ্চায়েতেই কমিটি গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল অগস্টের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু, বেশির ভাগ পঞ্চায়েতে খাতায়-কলমেও কোনও কমিটি গঠন হয়নি। আর যেখানে কমিটি গঠন হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনতে পারেনি দল। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাসের কটাক্ষ, ‘‘গোষ্ঠী কোন্দলে বিজেপি জর্জরিত। না হলে দলীয় নেতৃত্বের কাছে অপমানিত হয়ে কোনও নেতা দল ছাড়ার চিঠি দেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন