tmc

নিহতের বাড়িতে নেতা, বাইক মিছিল নিয়ে প্রশ্ন

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালনা ২ ব্লকের পাথরঘাটা গ্রামে হত মৃৎশিল্পী রবিন পালের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-সহ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৪
Share:

বিজেপির পতাকা হাতে মিছিল। মঙ্গলবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

গণপিটুনিতে হত ব্যক্তিকে দলের কর্মী দাবি করে গোড়া থেকেই সরব হয়েছে বিজেপি। থানায়, রাস্তায় বিক্ষোভ-অবরোধও করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালনা ২ ব্লকের পাথরঘাটা গ্রামে হত মৃৎশিল্পী রবিন পালের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-সহ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল।
সাংসদ বলেন, ‘‘মৃৎশিল্পীর এক মেয়ে মাধ্যমিক দিয়েছে, অন্য মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। বাবাকে হারিয়ে ওরা খুব সমস্যায় পড়েছে। যুব মোর্চার তরফে ছোট মেয়ের পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়া হচ্ছে। আমি ফিরে গিয়ে দলকে একটি রিপোর্ট দেব। পরিবারটিকে এককালীন অর্থসাহায্যও করা হবে।’’ যদিও তৃণমূলের দাবি, ‘অরাজনৈতিক’ বিষয় নিয়ে ‘রাজনীতি’ করছে বিজেপি।
গত শনিবার একশো দিনের প্রকল্পে কাঁচা নালা তৈরির কাজ চলাকালীন রবিনবাবুর সঙ্গে ঝামেলা বাধা শ্রমিকদের। পরে তাঁর ভাই থানায় অভিযোগ করে জানান, দাদার জায়গা দখল করে কাজ করানো হচ্ছিল। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হয়। রবিনবাবুর হাতে থাকা হাঁসুয়ার কোপ লাগে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা বাদল পাত্রের গায়ে। এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অন্য শ্রমিকেরা। অভিযোগ, পিণ্ডিরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের নেতৃত্বে বাঁশ, লাঠি, চেন দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় ওই মৃৎশিল্পীকে। পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মারা যান তিনি। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।
এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ তেঁতুলতলা থেকে দলীয় সাংসদকে মোটরবাইক-মিছিল করে নিহতের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। কালনা থানাতেও যাওয়ার কথা ছিল সাংসদের। জেলা থেকে প্রচুর বাহিনী এনে পাথরঘাটায় ঢোকার রাস্তা, তেঁতুলতলা মোড়, কালনা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মোতায়েন করে পুলিশ। কালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস। তবে সৌমিত্রবাবুর পৌঁছতে প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক দেরি হয়। প্রচুর কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সন্ধ্যায় ওই গ্রামে যান তিনি। ছিলেন জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শুভদীপ দাস, জাতীয় কাউন্সিলের সদস্য গোবর্ধন দাস, দলের জেলা সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারও।
করোনা পরিস্থিতিতে মোটরবাইক-মিছিল করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। অধিকাংশ কর্মী-সমর্থকের মুখে মাস্ক ছিল না, দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলেও অভিযোগ তাদের। তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘কোনও বিধির ধার ধারে না ওরা। অরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরছে বিজেপি।’’ তবে বিজেপির সহ সভাপতি ধনঞ্জয়বাবুর দাবি, ‘‘কর্মী-সমর্থকেরা সকলেই মাস্ক পরে এসেছিলেন। পরে গরমে কেউ হয়তো খুলে রাখতে পারেন। স্বাস্থ্যবি-ধি যথাসম্ভব মানা হয়েছে।’’ সাংসদের ফেরার সময়ে জিউধরা এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা রাস্তার ধারে জড়ো হয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয় বলেও জানা গিয়েছে। তবে কোনও উত্তেজনা তৈরি হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন