সেতু নিয়ে বহাল রেল-রাজ্য চাপানউতোর, সবটাই ‘ভোট-নীতি’, অভিযোগ বিজেপির

বিজেপির অভিযোগ, রেল বা কেন্দ্র সরকারকে এড়িয়ে আচমকা ‘একতরফা ভাবে’ সেতুর উদ্বোধন করে রাজ্য সরকার আদতে রাজনীতি করল।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২০
Share:

ফিতে কাটছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

রেলসেতু উদ্বোধন নিয়ে চাপানউতোর দেখা গেল বিজেপি-তৃণমূলে।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগ, রেল বা কেন্দ্র সরকারকে এড়িয়ে আচমকা ‘একতরফা ভাবে’ সেতুর উদ্বোধন করে রাজ্য সরকার আদতে রাজনীতি করল। সবটাই পুরভোটকে নজরে রেখা করা, দাবি তাঁদের। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের জন্যই বর্ধমানের এই সেতুর কাজে গতি ছিল না। রেলের গাফিলতি থাকার পরেও পূর্ত দফতর সাধ্যমতো কাজ করে সেই গাফিলতি পুষিয়ে দিয়েছে।

এর আগেও একই সেতুর দু’বার উদ্বোধনের নজির রয়েছে জেলায়। পানাগড় বাজারের যানজট এড়াতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই) ৮ কিলোমিটার বাইপাস রাস্তা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই রাস্তা শেষ হওয়ার পরে ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর রাস্তাটি উদ্বোধন করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র। মঞ্চ বাঁধা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধনের কয়েক ঘন্টা আগে রাস্তাটির উদ্বোধন করে দেন রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রেললাইনের উপর উড়ালপুল উদ্বোধনেও অভিযোগ ওঠে, মুখ্যমন্ত্রী রেলকে না জানিয়েই ওই উড়ালপুল উদ্বোধন করেছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “সবসময় কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া করব এটাই তৃণমূলের মানসিকতা। তাহলে রাজ্যের উন্নয়ন হবে কী ভাবে!’’ বর্ধমানের সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য দিলীপবাবুর মন্তব্যের জবাব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করে দিয়েছেন। কেউ এই সেতু দেখতে দু’শো বারও আসতে পারেন। তাঁকে সেতু ঘুরিয়ে দেখিয়ে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন কত সুন্দর ভাবে সফল হয়েছে। আর উদ্বোধন হবে না।’’

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও মনে করেন, সামনেই পুরভোট। উদ্বোধনকে সামনে রেখে ভোট-নীতি করছে তৃণমূল। তিনি বলেন, “উদ্বোধন করার পরে সেতুতে গাড়ি উঠবে তো? সবটাই গায়ের জোর।’’ উদ্বোধন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপড়েনকে ‘তামাশা’ বলে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের নেতা মহম্মদ সেলিমও।

জেলার মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের পাল্টা অভিযোগ, “রেলের গাফিলতিতেই সেতুর কাজ বারবার পিছিয়ে গিয়েছে।’’

২০১২ সালে কাজ শুরু হয় সেতুর। ২০১৬ সালের মাঝামাঝির মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু আরও তিন বছর লেগে গেল সে কাজ হতে। ফলে ‘সময় নষ্ট’ হয়েছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু কার গাফিলতি না কি ‘রাজনীতি’, সেটা প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন