রায়ানে স্থগিত বোর্ড গঠন, দ্বন্দ্ব অন্যত্রও

গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ফের বোর্ড গঠন স্থগিত হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল বর্ধমানে। কালনার নান্দাইয়ের পরে এ বার বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ান ২ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন বন্ধ হল বুধবার। এ দিন দুপুর ২টো থেকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট ঘরে ৯ জন সদস্যই অনুপস্থিত থাকায় বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share:

গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ফের বোর্ড গঠন স্থগিত হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল বর্ধমানে। কালনার নান্দাইয়ের পরে এ বার বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ান ২ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন বন্ধ হল বুধবার। এ দিন দুপুর ২টো থেকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট ঘরে ৯ জন সদস্যই অনুপস্থিত থাকায় বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এ দিন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতি ও মেমারি ২ ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতে ভোটাভুটি করে পদাধিকারী নির্বাচন করেন শাসকদলের সদস্যেরা। বারবার এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসকদলের নেতারা। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এ ব্যাপারে দলের জেলা সভাপতি থেকে বিধানসভার পর্যবেক্ষকদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রায়ান ২ পঞ্চায়েতে এ দিন সকাল ১১টা থেকে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর সদস্যেরা শাপরা গ্রামে পঞ্চায়েত ভবন ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন। বেলা ১টা নাগাদ সেখানে যান বর্ধমান উত্তর বিধানসভার পর্যবেক্ষক খোকন দাস, ব্লক সভানেত্রী কাকলি তা গুপ্ত ও প্রবীণ নেতা দেবু গুহ। দলীয় নেতৃত্ব সব সদস্যকে জানান, প্রধান হিসেবে সুলেখা বৈরাগ্য ও উপপ্রধান হিসেবে বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় কোনারকে সমর্থন করতে হবে। সুলেখা জেলা পরিষদ সদস্য সুজয় মালিকের অনুগামী হিসেবে পরিচিত।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, সদস্যদের অনেকে দলের উপপ্রধানের সিদ্ধান্ত মানতে রাজি হননি। তাঁরা ধনঞ্জয় পালকে উপপ্রধান পদে চান। দলীয় নেতৃত্ব তাতে সায় না দেওয়ায় পাঁচ সদস্য পঞ্চায়েত ছেড়ে চলে যান। প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী বুধবার ফের রায়ান ২ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হবে।

Advertisement

দলের কড়া নির্দেশের পরেও জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হতে যুবনেতা মেহেমুদ খানকে কঠিন লড়াইয়ে পড়তে হল। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, মেহেমুদ খানকে সভাপতি করার ব্যাপারে রাজ্যের এক শীর্ষ নেতা দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও বুধবার সভাপতি নির্বাচনের সময়ে মেহেমুদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়েন ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ পাল। শেষমেশ অবশ্য মেহেমুদ জেতেন ২০-১৯ ভোটে। একই ব্যবধানে মেহেমুদের অনুগামী দেবু হেমব্রম হারিয়ে দেন ঝুমা হেমব্রমকে। এর আগে জামালপুরের দু’টি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে ভোটাভুটি হয়েছিল। এ দিন প্রদীপবাবু স্বীকার করেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই প্রকাশ পেল।’’ তবে মেহেমুদ বলেন, ‘‘সবাই তৃণমূলের। সেখানে মুখ ফস্কে কে কী বলল, তা ধরলে চলবে না।’’

রায়না ১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতিতেও দলীয় নির্দেশ না মেনেই পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলে। রায়না ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি হিসেবে মৌসুমী ভট্টাচার্য ও ব্লক সভাপতি শৈলেন সাঁইয়ের নাম লিখিত ভাবে পাঠিয়েছিলেন জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। এ দিন রায়নার বিধায়কের সামনে সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন রত্না মহন্ত ও শেখ আনোয়ার আলি।

তৃণমূলের বিধানসভা এলাকার পর্যবেক্ষকেরা জানান, এ ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন