বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি কলেজে স্নাতক স্তরে আরবি পড়ার সুযোগ থাকলেও স্নাতকোত্তর স্তরে সেই সুযোগ ছিল না। একটি ছাত্র সংগঠন বেশ কয়েক বছর ধরে সে দাবিতে আন্দোলনও করে। অবশেষে সোমবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে স্নাতকোত্তর স্তরে আরবি পড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে অনুমোদনের জন্য বিষয়টি পাঠানো হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে বীরভূমের সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে ও নলহাটি হীরালাল কলেজে স্নাতক স্তরে আরবি পাঠক্রম চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দুটি কলেজেই পাস কোর্সের সঙ্গে অনার্সও পড়ানো হয়। বিদ্যাসাগর কলেজে অনার্সে ৬৬টি আর হীরালাল কলজে ৩০টি আসন রয়েছে। কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর না থাকায় পরবর্তী পড়াশোনার ক্ষেত্রে মুশকিলে পড়েন ওই পড়ুয়ারা। তাঁদের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে স্নাতকোত্তরের পাঠ নিতে হয়। এ বার সেই সমস্যা মিটে যাবে বলে পড়ুয়াদের আশা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বছরই আরবি নিয়ে স্নাতক হয়েছেন আউশগ্রামের পিচকুরির বাসিন্দা হাফিজুর চৌধুরী, মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের আজমত আলি, জঙ্গিপুরের মহম্মদ মুরাদ আলিরা। তাঁদের কথায়, “এই এলাকা থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে স্নাতকোত্তর করার মতো পরিস্থিতি আমাদের নেই। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর চালু হলে খুব সুবিধা হবে। স্নাতক করার পরে বসে থাকতে হবে না।” সিউড়ির শামিমা নাসরিন এ বছর আরবি নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তিও হয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “কলকাতায় থেকে পড়াশোনার খরচ অনেক। সেই ব্যয়ভার করতে গিয়ে পরিবারকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বর্ধমানে আরবি নিয়ে পড়ার সুযোগ মিললে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে এখানেইচলে আসব।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরে আরবি চালু করার দাবিতে আন্দোলন করছে ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস কনফেডারেশন। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আরিয়ান সুলতান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে স্নাতকোত্তরে আরবি চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা সকলেই খুব খুশি। এ বছরেই ওই পাঠক্রম চালু করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।”