যাত্রী তোলা নিয়ে বচসা জামুড়িয়ায়
Bus

অটো-টোটো ‘দৌরাত্ম্য’, বাস বন্ধ

আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জামুড়িয়া থেকে আসানসোল, রানিগঞ্জ, হরিপুর ও দোমোহানি রুটে ৬৮টি মিনিবাস চলাচল করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১১
Share:

স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস। বুধবার জামুড়িয়ায়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

টোটোর ‘দৌরাত্ম্যে’ বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জামুড়িয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিলেন পরিবহণ কর্মীরা।

Advertisement

আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জামুড়িয়া থেকে আসানসোল, রানিগঞ্জ, হরিপুর ও দোমোহানি রুটে ৬৮টি মিনিবাস চলাচল করে। জামুড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের মিনিবাসের এজেন্ট অশোক বাগদি জানান, এ দিন জামুড়িয়া থেকে দোমোহানি রুটে একটি মিনিবাস কয়েকজন যাত্রীকে নিয়ে স্ট্যান্ড ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে এক টোটোচালক বাস থেকে যাত্রীদের নেমে টোটোয় উঠতে বলেন। এ নিয়ে ওই বাসের কর্মীদের সঙ্গে টোটোচালকের বচসা বাঁধে। আরও কয়েকজন টোটোচালক জড়ো হন সেখানে। তাঁদের হাতে ওই বাসের কর্মীরা প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে অন্য বাসের কর্মীরা বাস চালানো বন্ধ করে দেন। তাঁদের দাবি, বাস রুটে টোটোর ‘দৌরাত্ম্য’ বন্ধ না হলে তাঁরা কেউ গাড়ি চালাবেন না।

আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত আসানসোল মহকুমা মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক রাজু অহলুওয়ালিয়া জানান, ২০১৮ সালে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘শো রুম’ থেকে নতুন টোটো বিক্রি করা যাবে না। এর আগে আসানসোল পুরসভা প্রায় ন’শো টোটোকে অস্থায়ী ‘আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ দিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, এই সমস্ত টোটো মালিকেরা পুরনো টোটোর বিনিময়ে পরিবহণ দফতরের অনুমতি নিয়ে নতুন ‘ই-রিকশা’ কিনতে পারবেন। অভিযোগ, কার্যত তা হচ্ছে না। নতুন করে টোটো বিক্রির রমরমা চলছে। রাজুবাবু জানান, টোটোগুলি বাস রুট ছাড়া, কোন রুটে চলবে তা-ও ঠিক করে দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সে সবও মানা হচ্ছে না বলে রাজুবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘জেলা পরিবহণ দফতরে টোটোর ‘শো-রুম’ মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এ বার ‘শো রুম’ মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।’’

Advertisement

আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, দু’বছর আগে রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলা পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিল, জাতীয়, রাজ্য সড়কের পাশাপাশি, বাস রুটে টোটো, অটো চালানো যাবে না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সচিব পুলকরঞ্জন দাশমুন্সির কাছে বারবার এই নির্দেশ কার্যকর করার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি।” সুদীপবাবুর অভিযোগ, লকডাউন-পর্বে বাস চালানো শুরু হওয়া নিয়ে ৬ জুন তাঁরা জেলাশাসকের দফতরে আয়োজিত বৈঠকে জানিয়েছিলেন, অটো, টোটোর ‘দৌরাত্ম্য’ বন্ধ না হলে তাঁরা বাস চালাতে পারবেন না।

জেলাশাসক আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি। তিনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, টোটো, অটো চালানোয় নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারলে তাঁরা সব রুটে বাস চালানো বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। তাই এ দিনের ঘটনার পরে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি ও ‘অবৈধ’ অটো, টোটো চালানো বন্ধের দাবিতে জামুড়িয়া রুটে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন পরিবহণ কর্মীরা। এর পরেও ব্যবস্থা না নিলে মহকুমা জুড়ে সমস্ত বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।

অভিযোগ ও দাবির বিষয়ে পুলকবাবু বলেন, ‘‘বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এ দিকে, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন