‘মেয়েটার রক্তাক্ত মুখটা চোখে ভাসছে’

শুক্রবার সকালে নাতবৌকে নিয়ে উৎপল পাশের চারুল গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিল। বিকেলে ফিরে আসে। পরে নাতবৌকে বাড়িতে রেখে কুসুমগ্রামে ছানার ব্যবসার কাজে চলে যায় উৎপল। শ্বশুর, শাশুড়ি ছেলেকে নিয়ে রোজকার মতোই বাড়িতে ছিল ওরা।

Advertisement

দয়াময়ী ঘোষ আক্রান্ত মহিলার ঠাকুমা শাশুড়ি

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৬
Share:

দয়াময়ী ঘোষ আক্রান্ত মহিলার ঠাকুমা শাশুড়ি

রাত ৯টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া সেরে একটু রাস্তার ধারে হাওয়ায় বসেছিলাম। আমাদের বাড়ি কাটোয়া-মালডাঙা রাস্তার উপরেই। আমাদের শোওয়ার ঘরের পাশে গোয়াল। তার একটা বাড়ি পরেই উৎপলদের (আক্রান্ত মহিলার স্বামী) বাড়ি। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও নাতবৌ বুল্টির সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কথাও বললাম। কে জানত রাতে এমন দশা হবে মেয়েটার!

Advertisement

শুক্রবার সকালে নাতবৌকে নিয়ে উৎপল পাশের চারুল গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিল। বিকেলে ফিরে আসে। পরে নাতবৌকে বাড়িতে রেখে কুসুমগ্রামে ছানার ব্যবসার কাজে চলে যায় উৎপল। শ্বশুর, শাশুড়ি ছেলেকে নিয়ে রোজকার মতোই বাড়িতে ছিল ওরা।

পৌনে ১০টা নাগাদ শুয়ে পড়েছিলাম আমি। ঘুমিয়েও পড়ি কিছুক্ষণের মধ্যে। হঠাৎ মনে হল কে যেন চিৎকার করছে। শুয়েই ঠাহর করার চেষ্টা করছিলাম। এক বার মনে হল গোঙানি, কান্নার আওয়াজ পেলাম। তাড়াতাড়ি বেরিয়ে উৎপলদের বাড়ির দিকে ছুটে যাই। দেখি ঘরের সামনে বারান্দায় পড়ে কাতরাচ্ছে নাতবৌ। রক্তে ভাসছে চার পাশ। ঘরের বিছানা, বারান্দা পেরিয়ে সিঁড়িতেও গড়াচ্ছে রক্ত। বুল্টির শাশুড়ি মানে আমার বৌমা দেখতে পায়, বিছানার নীচে মেঝেতে পড়ে রয়েছে তিনটে কাটা আঙুল। কী করব বুঝতে পারছিলাম না।

Advertisement

আমাদের চিৎকারে দু’শো মিটার দূরের বাসস্টপের কাছ থেকে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ছুটে আসে। পাশের অন্য আত্মীয়রাও এসে গ্রামের এক গাড়িচালককে ডেকে আনে। সবাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে যায় নাতবৌকে।

আমি গিয়ে পৌঁছনোর সময়েও নাতবৌর জ্ঞান ছিল। বলছিল, ‘ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিল। আচমকা আলো বন্ধ হতে ঘুম ভেঙে যায়। ঘরে ঢুকে কেউ বঁটি দিয়ে কুপিয়েছে।’

রাতেই পুলিশ ওই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পাহারা চলছিল। আমরা চাই পুলিশ দোষীদের ধরুক। মেয়েটার রক্তাক্ত মুখটা চোখে ভাসছে।

অনুলিখন: প্রণব দেবনাথ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন