কারখানায় জিনিস সরবরাহ নিয়ে গোলমাল ও হাতাহাতিতে জড়াল দুটি গোষ্ঠী। বুধবার সকালে বুধবার রানিগঞ্জের বল্লভপুর পেপারমিল চত্বরের ঘটনা। গোলমালের পরে পথ অবরোধও করে একটি গোষ্ঠীর লোকজন।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে শাসকদলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা বাধে। বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের কাগজকল শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সুশান্ত মণ্ডল ও শাসকদলেরই কর্মী তপন পাল। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বচসা গড়ায় হাতাহাতিতেও। এরপরেই সুশান্তবাবুরা বল্লভপুর ফাঁড়িতে তপনবাবুর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। খানিক বাদে তপনবাবুকে গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বাঁশতলা মোড়ে অবরোধ শুরু করেন সুশান্তবাবু ও তাঁর অনুগামীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এর জেরে প্রায় মিনিট দশেক ধরে রানিগঞ্জ থেকে বল্লভপুর যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে চলে এল দলের গোষ্ঠী কোন্দল। কারণ তপনবাবু দলের ভিতরে বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সিদান মণ্ডলের অনুগামী বলে পরিচিত। আর সুশান্তবাবু এগারা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূল নেতা অশোক হেলার অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত।
এ দিনের ঘটনার পরে প্রধান, উপপ্রধান উভয়েই বিরুদ্ধে গোষ্ঠীকে দোষারোপ করেছেন। অশোকবাবুর দাবি, গত ১৮ মে তপনবাবুকে নিয়ে সিটু কারখানায় হামলা চালায়। তারপরে মিল কর্তৃপক্ষ তপনবাবুকে বরখাস্তও করেন। অশোকবাবুর অভিযোগ, ‘‘এ দিন বিনা প্ররোচনায় তপনবাবু কাগজ কল শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সুশান্তকে বেধড়ক মারধর করে। এতে বল্লভপুরের গ্রাম প্রধান সিদানবাবুর মদত রয়েছে।’’ অশোকবাবুর অনুগামীদের দাবি, বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থার দাবিতে বহুবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ফল মেলেনি।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিদানবাবু। তপনবাবুকে ‘দীর্ঘদিনের সক্রিয় কর্মী’ বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, ‘‘নানা অপদার্থতার জেরে সুশান্তবাবুকে কাগজ কল শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে কথা বুঝতে পেরেই অশোকবাবু মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করাচ্ছেন।’’ সিদানবাবুদের দাবি, তপনবাবুকে বিনা কারণে কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে সরিয়ে দিলেও কারখানায় দলের সংগঠন কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাঁদের আরও দাবি, তপনবাবু এ দিন সংগঠনের সম্পাদকের কাছে জানতে চান, তাঁকে কবে কাজে ফেরানো হবে। এরপরেই সুশান্তবাবু চটে গিয়ে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এ দিন যদিও তৃণমূলের আসানসোল জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। দল খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।’’