প্রতীকী ছবি
আগামী পাঁচ দিনের জন্য জেলায় ওষুধের পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে বলে মঙ্গলবার আশ্বস্ত করেছে ‘বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’ (বিসিডিএ)। কিন্তু মুম্বই থেকে ওষুধ নিয়ে যে সব গাড়ি আসানসোলে আসে, তা সময়মতো পৌঁছতে না পারলে জোগান নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা বিসিডিএ। এই পরিস্থিতিতে ওই গাড়িগুলি যাতে চলাচল করে, তা নিশ্চিত করার আর্জি জানাচ্ছে বিসিডিএ।
তবে বিসিডিএ-এর আর্জি, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে ওষুধ যেন না কেনেন শহরবাসী। সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ রায় জানান, জেলার প্রতিটি ওষুধের দোকান মালিককে দু’পাতার (দশটা বা পনেরোটার) বেশি ওষুধ না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এই মুহূর্তে আইসিএমআর-এর তরফে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ‘হাইড্রোক্লোরোকুইন’ জাতীয় ওষুধের কথা বলা হয়েছে। এই ধরনের ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে জেলায়, দাবি সংগঠনের।
কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, চিকিৎসকের ‘প্রেসক্রিপশন’ ছাড়া এই ওষুধ না দেওয়ার জন্য বিসিডিএ-র কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। সংগঠনের তরফে অমিতাভবাবু জানান, জেলার সব ওষুধের দোকান মালিককে চিকিৎসকের ‘প্রেসক্রিপশন’-এর ফটোকপি সই করিয়ে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ জমা নিয়ে এই ওষুধ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে তাঁর আর্জি, ‘‘জীবনদায়ী-সহ বেশ কিছু সাধারণ রোগের ওষুধ মুম্বই থেকে শহরে আসে। এই ওষুধ পরিবহণ সংস্থার মাধ্যমে শহরে আসে। তাই, সীমানা দিয়ে ওষুধবাহী ট্রাক যাতে ঢুকতে পারে, তা নিশ্চিত করা দরকার।’’
এ দিকে, জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ রয়েছে। পাশাপাশি, আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, শহরে ওষুধের জোগান যাতে ঠিক থাকে, সে বিষয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে বৈঠক করে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শহরের কোনও প্রান্তে কেউ কোনও ওষুধ পেতে সমস্যায় পড়লে পুরসভার ‘হেল্পলাইন’ নম্বরে ফোন করলেই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা পদক্ষেপ করবেন।’’
পাশাপাশি, মঙ্গলবার দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার, বেনাচিতি-সহ নানা এলাকায় মঙ্গলবার বেশির ভাগ ওষুধের দোকানই খোলা ছিল। তবে দোকান মালিকদের একাংশ জানান, ক্রেতার অভাব নজরে পড়েছে। সাধারণত, বহু দোকান দুপুরে ঘণ্টা দু’য়েকের জন্য বন্ধ হয়। ফের বিকেলে দোকান খোলেন কর্মীরা। এ দিন তবে কিছু দোকান বিকেলে আর খোলেনি বলে শহরবাসী জানান। বেনাচিতির একটি দোকানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালিক বলেন, ‘‘সকাল থেকে ক্রেতার সংখ্যা কম। জরুরি পরিষেবা হিসেবে দোকান খোলা রাখতে হয়েছে। সন্ধ্যায় আর খোলার দরকার নেই বলে কর্মীদের বলেছি।’’ অন্য একটি দোকানের কর্মী বিনায়ক শর্মা বলেন, ‘‘কেউ যদি বিপদে পড়েন সে কথা ভেবে দিনভর দোকান খোলা রাখতে বলা হয়েছে। তবে সকাল থেকে ক্রেতার আশায় মাছি তাড়াচ্ছি।’’