প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ‘লকডাউন’-এর পথ নিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা সদর বর্ধমান শহর ছাড়া, কাটোয়া ও কালনার জনপদও পুরোপুরি বন্ধ হতে চলেছে। আজ, সোমবার বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত জেলার ওই তিনটে শহরের উপরে রাজ্য সরকারের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধিনিষেধ বলবৎ করা হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় ও জরুরি পরিষেবার বাইরে থাকা যাবতীয় কার্যকলাপও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গণপরিবহণের সঙ্গে দোকানপাট, সব রকমের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, অফিস-কাছারি, কারখানা, গুদাম বন্ধ রাখা হবে। বিদেশ, ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন এমন ব্যক্তিরা বা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে চিহ্নিত হওয়া ব্যক্তিরা বাধ্যতামূলক ভাবে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকবেন। খুব জরুরি না হলে বাকিদেরও বাড়িতেই থাকার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্বও। অর্থাৎ, অকারণ যাতায়াত, পাড়ায় জটলা থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে বিদ্যুৎ, পানীয় জল সরবরাহ, জঞ্জাল সাফাই, ব্যাঙ্ক-এটিএমের মতো পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, মুদিখানা, আনাজ, ফল, মাংস, দুধ-সহ বেশ কয়েকটি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রিতে বাধা নেই। বাড়িতেও খাবার পৌঁছে দেওয়া যাবে। পেট্রল পাম্প, ওষুধের দোকান, এলপিজি গ্যাসের সরবরাহও স্বাভাবিক থাকবে। সাত জনের বেশি এক সঙ্গে যাতায়াতেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
তবে জেলার তিনটে পুরসভায় ‘পূর্ণ নিরাপত্তা বিধিনিষেধ’ বলবৎ করার সিদ্ধান্ত হলেও মেমারি, গুসকরা বা দাঁইহাটের মতো পুর-শহর এর আওতা থেকে বাদ রয়েছে।
প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে সব শহরে বাইরে থেকে লোকজনের যাতায়াত বেশি সেই সব শহরকে প্রথমেই তালিকায় রাখা হয়। তার পরেই যে সব শহরে ভিন্ দেশ থেকে আগত মানুষরা ফিরে এসেছেন, সেই সব শহরকে রাজ্য সরকার পূর্ণ নিরাপত্তা বিধিনিষেধের তালিকায় রেখেছে। মেমারি শহরে দু’জন ভিন্ দেশ থেকে এসেছিলেন। তবে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এর সময়সীমা তাঁর পার করেছেন। সেই কারণে শেষ মুহূর্তে মেমারিকে ওই তালিকায় রাখা হয়নি। তবে জেলাশাসকের হাতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া আছে।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘ওই তিনটি শহর ছাড়া, মেমারি ও গুসকরা পুর-শহরেও ‘পূর্ণ নিরাপত্তা বিধিনিষেধ’ জারি করা নিয়ে আলোচনা করা হবে।’’ তবে জেলার অন্যত্র পরিস্থিতি কেমন থাকবে, তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেননি তাঁরা। আজ, সোমবার বেলা ১১টায় জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক হওয়ার কথা।