Coronavirus

করোনা-কালে সেতু তৈরির প্রক্রিয়া থমকে

কংক্রিটের এই সেতু তৈরির জন্য নদিয়ার শান্তিপুর এবং কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকায় জমি কিনতে হবে সরকারকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, নদিয়ার অংশে সেই কাজ এগিয়ে গেলেও পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকার পূর্ব সাহাপুর, হাঁসপুকুর, কুলিয়াদহ এবং বারাসত মৌজায় জমি কেনার কাজ চলছে ধীর গতিতে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০০:৪৪
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বছর দু’য়েক আগে কালনায় সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, কালনা ও নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে ভাগীরথীর উপরে সেতু তৈরির কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তার পরে জোরকদমে কাজে নামে প্রশাসন। বাজেটও বরাদ্দ হয়। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে সে প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। প্রশাসনের একাংশের দাবি, করোনা-পরিস্থিতিতে সেতুর জন্য জমি কেনার প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়েছে।

Advertisement

কংক্রিটের এই সেতু তৈরির জন্য নদিয়ার শান্তিপুর এবং কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকায় জমি কিনতে হবে সরকারকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, নদিয়ার অংশে সেই কাজ এগিয়ে গেলেও পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকার পূর্ব সাহাপুর, হাঁসপুকুর, কুলিয়াদহ এবং বারাসত মৌজায় জমি কেনার কাজ চলছে ধীর গতিতে। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শশীকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘জমির দাম নিয়ে অনেকে আপত্তি জানিয়েছেন। তা নিয়ে শুনানি হয়েছে। জমির দাম পুনর্মূল্যায়নের জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায়, সেপ্টেম্বর থেকে ফের জমি কেনা শুরু করা যাবে।’’

কালনা মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন এলাকায়, কতটা জমির উপর দিয়ে সেতুটি তৈরি হবে, ইতিমধ্যে তা চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে। সেতুর জন্য চার মৌজায় কিনতে হবে প্রায় দেড়শো ‘প্লট’। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত কেনা হয়েছে ২০টি ‘প্লট’। যে সব বাসিন্দার খেতজমি, তাঁদের দিক থেকে সরকারি ক্ষতিপূরণ নিয়ে তেমন আপত্তি ওঠেনি। কিন্তু রাস্তা লাগোয়া যে সমস্ত ‘প্লট’ রয়েছে, সেগুলির অনেক মালিক ক্ষতিপূরণের অঙ্কে সন্তুষ্ট নন। তা নিয়ে প্রশাসন বৈঠক করলেও জটিলতা কাটেনি।

Advertisement

প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, দ্রুত সমস্যা মেটাতে এলাকায় গিয়ে মাপজোক করে রাস্তার ধারের জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে দর ঠিক করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কাজ শুরু হতে যত দেরি হবে, তত সেতু তৈরির খরচ বাড়বে। করোনা-পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেই হয়তো বিষয়টি নিয়ে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হবে।’’

সেতুর ঘোষণায় কালনা ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু সেতু তৈরির কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। কালনার বাসিন্দা গোবিন্দ সরকারের কথায়, ‘‘সেতু তৈরি হলে শুধু যাতায়াতে সুবিধাই নয়, ব্যবসায়িক দিক থেকেও সুফল মিলবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, ২০২২ সালে সেতু তৈরি শেষ হবে না বলেই মনে হচ্ছে। কাজ কবে শুরু হবে, সেটা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।’’ আর এক বাসিন্দা স্বর্ণকমল মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘সেতু তৈরি হলে কালনা শহরে পর্যটকের আনাগোনা বাড়বে। তবে যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে বলে শুনেছি, কবে শেষ হবে কোনও নিশ্চয়তা নেই।’’

কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সেতুর বিষয়ে মাস চারেক কাজ বিশেষ এগোয়নি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুত জমি কিনে কাজ শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু দাবি করেন, ‘‘কাজ দ্রুত গতিতেই চলছিল। করোনা-পরিস্থিতি না হলে এত দিনে অনেকটাই কাজ এগিয়ে যেত। ফের সেতুর জন্য জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন