প্রতীকী ছবি
দ্বিতীয় পর্যায়ের মিড-ডে মিলের সামগ্রী দেওয়া শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। করোনা মোকাবিলায় কী কী সতর্কতা শিক্ষকদের নিতে হবে, সে বিষয়েও নির্দেশিকা গত ১৬ এপ্রিল জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে পাঠানো হয়। সে নির্দেশিকায়, স্কুল সাফাই করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বহু স্কুলেই সে কাজ নিয়ম মেনে হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের হাতে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দিতে হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক ভাবে ২০ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে শ্রেণি ভাগ করে চাল ও আলু বিতরণ সেরে ফেলতে বলা হয়েছে। সেই হিসাবে এ দিন প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবকদের হাতে চাল ও আলু তুলে দেওয়া হয়। আজ, মঙ্গলবার দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ, বুধবার তৃতীয় ও সপ্তম শ্রেণি এবং বৃহস্পতিবার চতুর্থ ও অষ্টম শ্রেণির জন্য দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই দিনগুলিতে যে অভিভাবকেরা আসতে পারবেন না, তাঁদের জন্য বাকি দিনগুলিকে হাতে রাখা হয়েছে।
স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে পাঠানো নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে স্কুল সাফাইয়ের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। অভিযোগ, বহু স্কুলেই সাফাই কাজ নিয়ম মেনে হয়নি। স্কুলগুলির অভিযোগ, সরকারি তরফে এ বিষয়ে কোনও সহযোগিতা মেলেনি। নিজেদের মতো করে তাই স্কুল সাফাই করে নিয়েছেন বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ। হাইস্কুলগুলির দাবি, ব্লিচিং পাউডার, ফিনাইল ইত্যাদি কেনার জন্য একটি তহবিল নির্দিষ্ট করা থাকে। তা দিয়ে কোনও রকমে কাজ করা গিয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলগুলিতে সাধারণত এ ধরনের কোনও তহবিল না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের।
বামপন্থী প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন ‘অল বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর দুর্গাপুর ২ নম্বর চক্রের সম্পাদক অনির্বাণ বাগচির অভিযোগ, ‘‘পুরসভা, থানা-সব জায়গায় যোগাযোগ করা হয়েছে। সে ভাবে সাড়া পাইনি।’’ তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ‘মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে যে যে স্কুল যোগাযোগ করেছে, সেখানে প্রশাসন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’’ একই দাবি করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পালও।
এ দিকে, মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী পাওয়া থেকে কেউ বঞ্চিত না হয় এবং সামগ্রী নিতে কোনও পড়ুয়া স্কুলে না আসে সেই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর। কারণ, এর আগে জেলার অনেক স্কুলে মিড-ডে মিলের সামগ্রী নিতে সামান্য কিছু সংখ্যক পড়ুয়া এসেছিল। বিষয়টি নিশ্চত করতে সংগঠনের তরফ থেকে ধারাবাহিক প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজীববাবু। স্কুলগুলির দাবি, এ দিন কোনও স্কুলেই মিড-ডে মিলের সামগ্রী নিতে পড়ুয়ারা আসেনি। মিড-ডে মিল খাদ্যসামগ্রী বিলিতে কোনও প্রতিবন্ধকতা না আসে, তা নিশ্চিত করতে জেলা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার বাস দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিদর্শক অজয়বাবু বলেন, ‘‘স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিলের সামগ্রী সহজে বিলি ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্বিঘ্নে স্কুলে পৌঁছে দিতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’