প্রতীকী ছবি।
গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে বাস থেকে নামিয়ে অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে গিয়ে এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল খয়রাশোলে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, রবিবারের ওই ঘটনায় সোমবার কাঁকরতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তবে প্রকাশ্যে আসে বুধবার। পুলিশের তরফে দাবি, গণধর্ষণের ঘটনাটি মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের কথায়, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
নির্যাতিতার প্রাথমিক চিকিৎসা হয় সিউড়ি হাসপাতালে। আপাতত ওই বধূ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, গ্রামেরই এক পরিচিত লোকজন জুটিয়ে ওই কাণ্ড করেছে। ঘটনার দু’দিন পার হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রের দাবি, এক জনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
পরিবার সূত্রের খবর, বছর দু’য়েকের মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে বাসে করে সিউড়ি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাচ্ছিলেন কাঁকরতলা থানা এলাকায় ওই বধূ। প্রায় ৩০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে দুবরাজপুরের কাছে এক জায়গায় বাস থামে। পরিবারের দাবি, সেখানেই অভিযুক্ত মোটরবাইকে যেতে যেতে বাসের জানলা দিয়ে বধূকে দেখতে পায়। তখনই মোটরবাইকে সিউড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। রাত পর্যন্ত আর বধূর কোনও খোঁজ মেলেনি। পরিজনেরা বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরে রাতেই থানায় মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানান।
নির্যাতিতার এক দাদার কথায়, ‘‘রবিবার রাতে সিউড়ি হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। জানানো হয়, বোনের উপরে অত্যাচার হয়েছে। দ্রুত পৌঁছতে বলা হয়।’’ পরিবারের আরও দাবি, সেই রাতে সিউড়ি গিয়ে জানা যায় স্বামী পরিচয় দিয়ে কোনও যুবক নির্যাতিতাকে ভর্তি করিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। এর পর সোমবার কাঁকরতলা থানায় লিখিত ভাবে গণধর্ষণের অভিযোগ হয় বলে পরিবারের দাবি।
এ দিকে, সোমবারের পর থেকেই মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যৌন নির্যাতন ছাড়াও মারধর করা হয়েছে। মাথায় আঘাত রয়েছে। এর পরেই রেফার করে দেওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নির্যাতিতার দাদার কথায়, ‘‘বোনের উপরে এত অত্যাচার করেছে যে, বুধবার রাত পেরোলেও জ্ঞান ফেরেনি।’’ নির্যাতিতার শিশুকন্যারও মাথায় আঘাত ছিল। তবে সিউড়ি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত খয়রাশোলের বাড়িতেই রয়েছে।