ভাটা ডিজিটাল লেনদেনে, খুচরোই গুনছেন বিক্রেতারা

২০১৬ সালের শেষ দিকে নোট বাতিলের পরপরই বড়-মাঝারি দোকানগুলিতে প্ল্যাকার্ড ঝুলতে শুরু করেছিল, ‘এখানে সব ব্যাঙ্কের কার্ড গ্রহণ করা হয়’।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০১:৫০
Share:

নগদেই চলছে কারবার। বর্ধমানের এক দোকানে। নিজস্ব চিত্র

তড়িঘড়ি যন্ত্র কেনা হয়েছিল। তা ব্যবহারও হচ্ছিল। কিন্তু বছর ঘুরতেই আবার ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। দোকান-বাজারে ডিজিটাল লেনদেনের সেই তাগিদ আর নেই ক্রেতাদের মধ্যে। ফলে, কার্যত পড়েই রয়েছে কার্ড সোয়াইপ করার যন্ত্রগুলি। উল্টে, প্রচুর খুচরো টাকা লেনদেন হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বর্ধমানের দোকানদারেরা।

Advertisement

২০১৬ সালের শেষ দিকে নোট বাতিলের পরপরই বড়-মাঝারি দোকানগুলিতে প্ল্যাকার্ড ঝুলতে শুরু করেছিল, ‘এখানে সব ব্যাঙ্কের কার্ড গ্রহণ করা হয়’। বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও লেনদেনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছিল। ব্যবসায়ীদের তড়িঘড়ি নিয়ে আসা সোয়াইপ যন্ত্রগুলি বেশ ব্যবহারও হচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই আবার তাতে ভাটা পড়ে গিয়েছে। নগদের জোগান খানিকটা স্বাভাবিক হতেই সোজাসাপ্টা লেনদেনে ফিরে গিয়েছেন ক্রেতারা, দাবি বিক্রেতাদের। যদিও ব্যাঙ্কের কর্তাদের মতে, ডিজিটাল লেনদেন বাড়াতে ব্যবসায়ীরাও উৎসাহ দিচ্ছেন না।

বর্ধমানের কার্জন গেট এলাকার বস্ত্র ব্যবসায়ী আশিস কংসবণিক বলেন, “নোটবন্দির সময় দিনে প্রায় ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছিল কার্ডে। এখন তা হচ্ছে মোটে ১০ শতাংশ।’’ একই মত শহরের একটি কসমেটিক জিনিসের দোকানের মালিক শ্যামল রায়ের। তিনি বলেন, “ওই সময়ে প্রায় সব লেনদেনই হত কার্ডে। এখন সেখানে যন্ত্র পড়েই থাকে। দিনে দু’একটি লেনদেন হয়।” শহরের একটি ইলেক্ট্রনিক্স জিনিসের প্রতিষ্ঠানের কর্মী দেবযানী চৌধুরী বলেন, ‘‘মাসের হয়তো ৪০ শতাংশের মতো লেনদেন কার্ডে হচ্ছে, কিন্তু বছরখানেক আগে তার চেয়েও বেশি হচ্ছিল।’’

Advertisement

প্রসাধনী সামগ্রীর ক্রেতা মৌসুমি মাঝি জানান, সেই সময়ে নগদ কম থাকত হাতে। তাই কার্ডেই দাম মেটাতেন। এখন সেই সমস্যা নেই। বিসি রোডের একটি দোকানে কাপড় কিনতে আসা বধূ মীরা মালিক, ঝুমা দোলুইদের বক্তব্য, “নগদে লেনদেন করাই তো সহজ। আমাদের পক্ষে ওটাই সুবিধের।’’

গয়না বিক্রির একটি নামী দোকানের বর্ধমান শাখার কর্ণধার সঞ্জীব চৌধুরী জানান, তাঁদের বড় অঙ্কের লেনদেনগুলি এখনও বেশির ভাগ কার্ডেই হচ্ছে। তবে মোটা টাকা নিয়ে যাতায়াতের ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতে চাওয়াই এর কারণ বলে মনে করছেন তিনি। অন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় গয়নার দোকানে কার্ডে লেনদেন বেশি বলে জানা গিয়েছে।

বর্ধমান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব বলেন, ‘‘ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে এখনও সচেতনতার অভাব আছে। অনেকেই ঝামেলা এড়িয়ে নগদে লেনদেন বেশি পছন্দ করে। সবার আগে সচেতন করা দরকার ছিল।’’

বর্ধমানের একটি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার শিবশঙ্কর গুপ্তের মতে, ‘‘কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ দিচ্ছেন না। ব্যাঙ্কগুলিকে এ বিষয়ে সচেতন করতে প্রচার চালাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন