বিশ্বজিৎ মজুমদার ও প্রিয়লাল শীল। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে ভুয়ো ডাক্তার নিয়ে নড়াচড়া শুরু হতেই চেম্বারের সাইনবোর্ডে সাদা রঙের পোঁচ দিয়েছিলেন তিনি। ঢেকে দিয়েছিলেন ‘ডক্টর’, ‘গ্যাসট্রো-এন্টেরোলজি, রিউম্যাটোলজি ও ফিজিওথেরাপিতে বিশেষজ্ঞ’ শব্দগুলো। স্থানীয় বাসিন্দাদের জেরায় ডিগ্রিতে গোলমালের কথা মেনেছিলেন প্রিয়লাল শীল। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের স্বাস্থ্য-কর্তার কাছে শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি জমা দিয়ে কাঁদতে দেখা গেল তাঁকে।
প্রায় একই সময়ে কাটোয়ার কাছারি রোডের ‘দাঁতের ডাক্তার’ বিশ্বজিৎ মজুমদারও চেম্বার বন্ধ রেখে ডিগ্রি বদলেছিলেন। ‘বিডিএস’-এর (ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারি) বদলে ‘বিডিএসএ’। দাবি করেছিলেন, প্রেসক্রিপশনে ছাপায় ভুল ছিল। জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কবিতা শাসমলের কাছে এ দিন কাগজপত্র জমা দেন তিনিও।
কবিতাদেবী জানান, প্রিয়লালবাবু ‘ন্যাচরাল মেডিসিন’, ‘ইউনানি মেডিসিন’-এর এবং বিশ্বজিৎ ‘ডেন্টাল টেকনিশিয়ান’ পাঠ্যক্রমের শংসাপত্র জমা দিয়েছেন। শংসাপত্রগুলি আসল কি না পরীক্ষা করে দেখা হবে। তিনি বলেন, ‘‘জেলার মু্খ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে সব নথি পাঠাব।’’
প্রিয়লাল সম্পর্কে খোঁজ নিতে জানা গিয়েছিল, পূর্বস্থলীর উত্তর পলাশফুলির ওই বাসিন্দাকে প্রবীণেরা ক্ষৌরকার হিসেবে চিনতেন। আর পড়শিরা চেনেন ‘ফিজিওথেরাপিস্ট’ হিসেবে। এ দিন স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে বেরিয়ে প্রিয়লালকে জোড় হাতে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভুল হয়েছে, আর কখনও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করতে যাব না। স্বাস্থ্য দফতর অনুমতি দিলে ইউনানি ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা করব।’’ আর বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘যা বলার, আমার আইনজীবী বলবেন।’’
প্রিয়লালের কান্নাকাটির খবর জেনে পূর্বস্থলীতে তাঁর পড়শিদের বক্তব্য, ‘‘ভুয়ো ডিগ্রি লেখার আগে, ভাবা উচিত ছিল।’’