ডিএসপি টাউনশিপে শোকগ্রস্ত পরিবার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
বেঙ্গালুরুতে পথ দুর্ঘটনায় কিশোর ছেলে-সহ মৃত্যু হল দুর্গাপুরের এক দম্পতির। মারা গিয়েছেন গাড়ির আরও দুই আরোহী, যাঁরা সম্পর্কে ওই দম্পতির আত্মীয়। রবিবার গভীর রাতে দুর্ঘটনা ঘটে। সেই খবর আসার পর থেকে শোকের ছায়া ডিএসপি টাউনশিপের আকবর রোড এলাকায়।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দীপঙ্কর দে (৪৪), তাঁর স্ত্রী স্বাগতা (৩৭), ছেলে ধ্রুব (১৩), শ্যালিকা ঝিলমিল নায়ার (৪০) ও শাশুড়ি জয়িতা চৌধুরীর (৬২)। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন গাড়িটির চালক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের আকবর রোডে ডিএসপি-র কোয়ার্টারেই বড় হয়েছেন দীপঙ্করবাবু। তাঁর বাবা সমরেন্দ্রনাথবাবু দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের প্রাক্তন কর্মী। তিনি জানান, ২০০৩ সাল থেকে ছেলে বেঙ্গালুরুতে আইটি সংস্থায় চাকরি করেন। পুত্রবধূ স্বাগতা সেখানে একটি স্কুলের শিক্ষিকা। নাতি ধ্রুব অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। দীপঙ্করবাবু বাড়ির বড় ছেলে। অন্য বছরে ছেলের গরমের ছুটিতে সপরিবারে দুর্গাপুরের বাড়িতে আসতেন তিনি। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে গৃহপ্রবেশ হয়। এ বার আর তাই দুর্গাপুরে আসা হয়নি দীপঙ্করবাবুদের।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে ঝিলমিল চেন্নাই থেকে বেঙ্গালুরুতে যান। তাঁকে আনতে রাত ২টো নাগাদ গাড়িতে স্ত্রী, ছেলে ও শাশুড়িকে নিয়ে দীপঙ্করবাবু বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে যান। ঝিলমিলকে নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে গাড়িটি। কোনও বড় গাড়ি তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃত্যু হয় গাড়ির পাঁচ আরোহীর। চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দীপঙ্করবাবুর দুর্গাপুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মা কৃষ্ণাদেবী কেঁদে চলেছেন। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই তিনি। সমরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘দুর্গাপুর থানা থেকে সোমবার দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়। ছোট ছেলে শুভঙ্কর সন্ধ্যার বিমানে বেঙ্গালুরু গিয়েছে। ওখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।’’ প্রতিবেশীরা জানান, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সপরিবারে দীপঙ্করবাবুর মৃত্যুর খবর আসাপ পর থেকে শোকস্তব্ধ এলাকার সকলেই।