জেলার জন্মে নিরুত্তাপ দুর্গাপুর

প্রত্যাশা ছিল এক। হয়েছে আর এক। চাওয়া-পাওয়ার মাঝে সেই ফাঁক থেকেই বেরিয়ে এল ‘অভিমান’! আর সেটাও একেবারে প্রথম দিনেই।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

প্রত্যাশা ছিল এক। হয়েছে আর এক। চাওয়া-পাওয়ার মাঝে সেই ফাঁক থেকেই বেরিয়ে এল ‘অভিমান’! আর সেটাও একেবারে প্রথম দিনেই।

Advertisement

দু’দিন ধরে শাসকদলের তরফে ব্যানার, প্লাকার্ড লাগানো, আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুরের আমজনতা তাতে সে ভাবে সামিল হননি। শুক্রবার, নতুন জেলার প্রথম দিনেও দুর্গাপুর কার্যত নিরুত্তাপ রইল। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও শহরের অনেকে বিভিন্ন রকম ক্ষোভ উগরে দিলেন।

জেলা ভাগের তো়ড়জোড় শুরু হতেই দুর্গাপুরকে জেলা সদর করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই দৌড়ে পিছিয়ে পড়তেই নতুন জেলা নিয়ে উন্মাদনা তলানিতে ঠেকে। নতুন জেলা পেয়েও অভিমান যায়নি। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের ডেভিড হেয়ার রোডের বাসিন্দা প্রাক্তন এএসপি কর্মী রঞ্জিত গুহ বলেন, ‘‘পশ্চিম বর্ধমান জেলার সদর দুর্গাপুর হল না। আমরা আমাদের দাবির সমর্থনে একজোট হতে পারিনি।’’ বিধাননগরের ফুলঝোড়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফার্মাসি কলেজের চেয়ারম্যান, সিটি সেন্টারের অম্বুজা এলাকার বাসিন্দা দুলাল মিত্র বলেন, ‘‘দুর্গাপুর পরিকল্পিত ফাঁকা শহর। আমাদের শহর জেলা সদর হলে বেশ ভাল হতো। তবে রাজ্য সরকার নিশ্চয়ই আসানসোলকে বেশি উপযুক্ত মনে করেছে।’’ অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার দুর্গাপুর বিভাগের কর্তা সমীর বসু বলেন, ‘‘জেলা পরিবহণ দফতরে আমাদের বহু কাজ থাকে। দুর্গাপুরে হলে সুবিধা হতো। আসানসোল ছুটতে হত না।’’ ‘‘দুর্গাপুর অনেকটা একঘরে হয়ে গেল। জেলা সদর আসানসোল হওয়ায় ‘ফোকাস’ চলে যাবে সে দিকে’’— মনে করেন মিনিবাস মালিক সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এর সাধারণ সম্পাদক কাজল দে।

Advertisement

ব্যবসায়িক দিক থেকে দুর্গাপুরের ক্ষতি হল, এই দাবির সঙ্গেও একমত অনেকে। এক আইনজীবী জানান, গলসি ১ ব্লক মহকুমা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় আদালতে কাজ কমবে। আইনজীবী, ল-ক্লার্ক থেকে শুরু করে অনেকের অসুবিধা হবে।

তবে জেলা সদর না হলেও প্রশাসনিক কাজে সুবিধা মিলবে বলে ধারণা অনেকের। ফরিদপুরের নতুনডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের বাসিন্দা সন্তোষ চট্টোরাজ বলেন, ‘‘আমার স্কুল থেকে আসানসোলের তুলনায় বর্ধমানের দূরত্ব ছিল দ্বিগুণের বেশি। এখন চিন্তা অনেকটা কমে গেল।’’ দুর্গাপুর হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার, বিধাননগরের বাসিন্দা মিহির নন্দীও মনে করেন, নতুন জেলায় প্রশাসনিক কাজে গতি আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন