পুজোর প্রস্তুতি চলছে সিমলন গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
ছ’পুরুষ আগে পুজো শুরু হলেও মাঝে কয়েক বছরের ছেদ। পরিবারের আর্থিক টানাপড়েনর সঙ্গে বদলেছে পুজোর জাঁকও। কিন্তু কালনার সিমলনের ধনী পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে গ্রামের মানুষের আজও উৎসাহের খামতি নেই।
পরিবারের বর্তমান সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত কারাকর্মী কমলাকান্ত ধনী জানান, তিন শতাব্দী আগে পুজোর শুরু করেন তাঁদের পূর্বপুরুষ রামকিঙ্কর ধনী। পরিবার ও এলাকার সমৃদ্ধির জন্যই পুজোর প্রচলন করেন রামকিঙ্করবাবু। পুজো উপলক্ষে ধনী বাড়িতে ভিড় জমাতেন মছলন্দপুর, আটঘড়িয়া এলাকার মানুষজনও। টানা তিন পুরুষ ধরে পুজো চলার পরে আর্থিক কারণে পুজো বন্ধ হয়ে যায়। তবে পুজো বন্ধ হয়ে গেলেও বাড়িতে লোহার একটি টুকরোকে দেবী জ্ঞানে পুজো করা হতো বলে জানান পরিবারের বধূ গীতারানিদেবী।
ফের পুজোর শুরু হল কী ভাবে? কমলাকান্তবাবু জানান, দু’দশক আগে দেবীর স্বপ্ন দর্শন পেয়েই ফের পুজোর শুরু করেন। প্রথম দিকে পটচিত্রে পুজো হলেও বর্তমানে মৃণ্ময়ীর আরাধনা হয়। পুরনো মূর্তিতে দেবীর সঙ্গে জয়া-বিজয়া না থাকলেও বর্তমানে তাঁরা থাকেন বলে ধনী পরিবারের সদস্যদের দাবি। পরিবারের বর্তমান সদস্যরা জানান, এখানে আজ, বুধবার, নবমীতে এক দিন পুজো হয়। রয়েছে কুমারী পুজোর প্রচলনও।
পুজো উপলক্ষে বেশ কয়েকটি রীতি রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, দশমীতে পুরোহিত ঢাকিকে সঙ্গে করে গ্রামের ‘পঞ্চ দেবতা’কে পুজো করেন। তারপরে দেবী মূর্তির বিসর্জন দেওয়া হয়। দশমীতে বাড়ির মহিলারা যোগ দেন সিঁদুর খেলায়।
মঙ্গলবার থেকেই সাজো-সাজো রব ধনী পরিবারে। বাড়ির সামনে তোরণ বসানো থেকে শুরু করে প্রতিমার ডাকের সাজ, ভোগের মিষ্টি তৈরি— সবই সারা হয়ে গিয়েছে। পারিবারিক পুজো হলেও তাতে ভি়ড় জমান গ্রামের প্রায় হাজার পাঁচেক বাসিন্দার একটা বড় অংশ। বিভিন্ন জায়াগা থেকে আসেন পরিবারের সদস্যরাও। বাড়ির বধূ মুনমুনদেবীর কথায়, ‘‘বছরভর অপেক্ষা থাকি, কখন পুজো আসবে। পুজো মানেই দেবী আরাধনা আর সকলে মিলে আড্ডা!’’