Damodar River

জামালপুর, গলসিতে জমি তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে, জল নামতেই ফের দুঃখের কারণ দামোদর

দামোদরের সেই জলস্তর কমেছে এখন। তবে ব্যাপক ভাবে ভাঙছে নদীর পাড়। ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বিভিন্ন এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ২০:১৫
Share:

পাড় ভাঙছে দামোদর। নিজস্ব চিত্র

নদীর জলস্তর নামতেই এখন নতুন বিপদ ভাঙন। দামোদর এবং ভাগীরথির ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। তার জেরে আতঙ্কও ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা এবং কৃষকদের মধ্যে।

Advertisement

নাগাড়ে কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং ডিভিসি-র জলাধার থেকে ছাড়া জলে ফুলেফেঁপে উঠেছিল দামোদর। তার জেরে পূর্ব বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকায় তৈরি হয় প্লাবন পরিস্থিতি। সেই দামোদরের জলস্তর কমেছে এখন। তবে ব্যাপক ভাবে ভাঙছে নদীর পাড়। ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েতের অমরপুর এবং গলসি দুই নম্বর ব্লকের ভুঁড়ি পঞ্চায়েতের কালিমোহনপুর এলাকায়। ধান জমি বা সবজি চাষের জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে চাষজমি রক্ষা করবেন সে কথা ভেবেই এখন দিশেহারা ওই সব এলাকার কৃষকরা। অমরপুরের কৃষক শেখ মোবারক বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন আগেই দামোদর ফুলেফেঁপে উঠেছিল। এখন সেই জল কমতেই অমরপুরের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় দামোদরের পাড় জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। কী করব জানি না।’’

একই ভাবে দামোদর পাড়ের ভাঙন মারাত্মক চেহারা নেওয়ায় গলসির কালীমোহনপুর এলাকার প্রায় দু’হাজার কৃষক পরিবারের মাথায় হাত পড়েছে। এলাকার কৃষক শ্যামল রায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমার চার-পাঁচ বিঘা জমি দামোদরে তলিয়ে গিয়েছে। আর দু-তিনশো ফুট গেলেই গ্রামের ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করবে।’’

Advertisement

গলসি ছাড়াও জেলার কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী দুই নম্বর ব্লকের মাজিদা পঞ্চায়েতের তামাঘাট এলাকায় শুরু হয়েছে ভাগিরথির ভাঙন। আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, ‘‘ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বোল্ডার দিয়ে নদী পাড় বাঁধার কাজ হয়েছে অনেক জায়গাতেই।’’

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের প্রধান শ্রীমন্ত গুপ্তের মতে, ‘‘নদী এক দিক গড়ে, আর এক দিক ভাঙে। এটাই নদীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু নদী থেকে অবৈজ্ঞানিক ভাবে বালি তোলার জন্য ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে। কিন্তু গড়ার কাজ ততটা হচ্ছে না। ভাঙন রোধে দীর্ঘমূলের বৃক্ষ রোপণ করতে হবে নদীপাড়ে। তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ভাঙন আটকানো যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন