— প্রতীকী চিত্র।
একই জেলায় দুই পৃথক ঘটনায় চার জনের মৃত্যু। পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করার পর আত্মঘাতী হন মা। পূর্ব বর্ধমানের কালনায় মা-মেয়ের মৃত্যুতে শোরগোল পড়েছে। অন্য দিকে, মেমারিতে এক বাড়ি সেপটিক ট্যাঙ্কে কাজ করতে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই শ্রমিকের!
কালনা থানার সিমলনের গুপ্তিপুর এলাকায় মা ও তাঁর পাঁচ বছরের শিশুকন্যার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে রবিবার সকালে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমা হেমব্রম নামে এক মহিলা প্রথমে তাঁর কন্যা সোহিনীকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। তার পরে আত্মঘাতী হন। বৌমা কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না সোমার শাশুড়ি। তাঁর দাবি, রবিবার সকালে সোমার বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। সোমার শাশুড়ির কথায়, ‘‘সকালেই আমার হাতে লোনের কিস্তির এবং বিদ্যুৎ বিলের টাকা দেয়। তার পরে আমি কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পরে বাড়ি ফিরে জানতে পারি এমন ঘটেছে।’’
সোমার স্বামী কর্মসূত্রে ভিন্রাজ্যে থাকেন। কালনার বাড়িতে শাশুড়ি এবং কন্যাকে নিয়ে থাকতেন সোমা। রবিবার ওই বাড়িতে থেকে উদ্ধার হয় মা এবং মেয়ের নিথর দেহ। শাশুড়ির দাবি, বাড়িতে কোনও অশান্তি ছিল না। তার পরেও কেন সোমা এমন কাণ্ড ঘটালেন তা বুঝতে পারছেন না কেউই। কালনা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
অপর দিকে, মহালয়ায় মেমারির ১ নম্বর ব্লকের কৈলাসপুর গ্রামে এক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে স্থানীয় এক গৃহস্থের বাড়ির বুজে যাওয়া সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যু হয় সাবির আলি প্রধান এবং জনৈক সামু নামে দুই ব্যক্তির। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ট্যাঙ্কে নামার পরই বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থবোধ করেন তাঁরা। কিন্তু উপরে উঠে আসতে পারেননি। ওই সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন তাঁরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় মেমারি থানার পুলিশ, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। প্রায় ঘণ্টা চেষ্টার পর সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে থেকে দু’জনের নিথর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। মৃতদের মধ্যে সাবিরের বাড়ি কালনার ধাত্রীগ্রামের কালীনগর পূর্ব পাড়ায়। অন্য জনের বাড়ি হুগলির পান্ডুয়ায় পটলডাঙায়। পুলিশ মৃতদেহ দু’টিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, বিষাক্ত গ্যাসের কারণে আরও তিন শ্রমিক এবং ওই বাড়ির ছেলেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে বর্তমানে তাঁরা এখন সুস্থ রয়েছেন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিডিও (মেমারি-১) শতরূপা দাস বলেন, “পুলিশের কাছ থেকে সকাল ১১টা নাগাদ দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। অচৈতন্য অবস্থায় পৌনে ৩টে নাগাদ দেহ দু’টি উদ্ধার করে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’ বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের আধিকারিক ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “অবৈজ্ঞানিক এবং অপরিকল্পিত ভাবে সেপটিক ট্যাঙ্ক চওড়া করা হচ্ছিল। সে কারণেই পাশের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস বার হয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।”