রেশন কার্ডের গেরোয় আবার লাইনে অপেক্ষা

আবার সকাল-সকাল গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো। দিনভর অপেক্ষা। এ বার এমন ছবি রেশন অফিসের সামনে। ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন বা সংশোধনের জন্য ফর্ম পেতে নাজেহাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৭
Share:

রোজ সকাল থেকে পড়ছে লম্বা লাইন। নিজস্ব চিত্র।

আবার সকাল-সকাল গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো। দিনভর অপেক্ষা। এ বার এমন ছবি রেশন অফিসের সামনে। ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন বা সংশোধনের জন্য ফর্ম পেতে নাজেহাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। নোট বাতিলের জেরে ব্যাঙ্ক বা এটিএমের সামনে ভোগান্তির খানিক সুরাহা হতে না হতেই ফের লাইনে দাঁড়ানোর ঝঞ্ঝাট পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। সমস্যা মেটাতে রেশন দোকান থেকে ফর্ম বিলির দাবি তুলেছেন নানা রাজনৈতিক দলের নেতারা। কিন্তু সরকারি নির্দেশ ছাড়া সেই ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন খাদ্য দফতরের আসানসোলের ডেপুটি ডিরেক্টর ভাস্কর হালদার।

Advertisement

আসানসোল মহকুমায় এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে পাননি লক্ষাধিক উপভোক্তা। কবে পাবেন, তা নিশ্চিত নয়। যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের কার্ডে অসংখ্য ভুলভ্রান্তি রয়েছে বলে অভিযোগ। কোথাও গ্রাহকের নামে ভুল, কোথাও আবার পদবি বা অভিভাবকের নাম পাল্টে গিয়েছে। কারও আবার ঠিকানা বদলে গিয়েছে। কেউ হাতে কার্ড পেলেও রেশন দোকানের তালিকায় তাঁর নাম নেই।

নতুন কার্ড পেতে বা ভুলভ্রান্তি শোধরাতে সকাল থেকে দফতরের সামনে লাইন দিচ্ছেন গ্রাহকেরা। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ভুলের দায় পুরসভা বা খাদ্য দফতরের নয়। রেশন ডিলারদের একাংশ গ্রাহকদের ফর্ম পূরণ করার সময়ে নামধাম ভুল লেখায় এই বিপত্তি হয়েছে। এরই মধ্যে শহরে রটেছে, ভুল সংশোধন ও নতুন কার্ড পাওয়ার আবেদনের ফর্ম ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে। সে কারণে লাইনে হুড়োহুড়ি বাড়ছে। উপচে পড়েছে গ্রাহকদের ভিড়। কোথাও-কোথাও ঝামেলাও বেধে যাচ্ছে। যদিও এই প্রচার গুজব বলে জানান খাদ্য দফতরের আসানসোলের কর্তা ভাস্করবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেকেই ফর্ম পাবেন ও পূরণ করে জমা দিতে পারবেন।’’

Advertisement

আসানসোল পুরসভা এলাকায় ডিজিটাল রেশন কার্ড সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন শাসক ও বিরোধী, দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরাই। সম্প্রতি এর প্রতিবাদে পুরভবনের অদূরে বড় জমায়েত করে সিপিএম। বুধবার খাদ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা মেটানোর দাবি জানিয়েছে জেলা তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলের নেতা তথা পুসভার অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা দাবি তুলেছি, রেশন দোকানগুলি থেকে ফর্ম তোলা ও জমা নেওয়ার কাজ হোক।’’

খাদ্য দফতরের আধিকারিক ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশ না পেলে এই ব্যবস্থা চালু করতে পারব না।’’ তিনি জানান, পুরসভা এলাকায় এখনও লক্ষাধিক বাসিন্দা ডিজিটাল কার্ড পাননি। হাল ফেরাতে দফতরের কর্মীরা নিরন্তর কাজ করছেন। যাঁদের হাতে ডিজিটাল কার্ড নেই তাঁরা মার্চ মাস থেকে রেশন পাবেন কি না, সেই প্রশ্নও তৈরি হয়েছে গ্রাহকদের মতে। ভাস্করবাবু জানান, সরকারের তরফে এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন