ফাইল চিত্র
দালালের হাত থেকে বাঁচানোর নাম করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
খিঁচুনির সমস্যায় ভোগা ছেলেকে নিয়ে সাতসকালে হাসপাতালে হাজির হয়েছিলেন বর্ধমানের জিয়ারা-গোপালপুর এলাকার ভোলানাথ ঘড়ুই। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখানোর পরে রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। রক্তের বেশ কিছু পরীক্ষা করানোর কথাও বলা হয়। ভোলানাথবাবুর অভিযোগ, সাহায্যের নাম করে ওয়ার্ডে থাকা এক জন এগিয়ে আসেন। দালালের খপ্পরে পড়ার ভয় দেখিয়ে খোসবাগানের একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে সমস্ত পরীক্ষা করান তিনি। ওই ব্যক্তির দাবি, রিপোর্ট নিয়ে হাসপাতালে আসতেই বেসরকারি ল্যাবরেটরির কাগজ দেখে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। সাহায্যের নামে আসলে তাঁকে প্রতারণা করা হয়েছে বুঝে অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও হাসপাতাল সুপারের অফিস বন্ধ থাকায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত মাসেও এ ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল মেডিক্যালে। কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বিউটি হাজরা। রক্ত, প্রসাব, কফ পরীক্ষার কথা বলা হয় তাঁকে। ওই পরিবারের অভিযোগ, এক আয়া তাঁদের জানান, পরীক্ষাগুলি হাসপাতালে হয় না। বাইরে থেকে করাতে হবে। তিনিই খোসবাগানের একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যান তাঁদের। পরীক্ষা করানোর পরে রিপোর্ট না পেয়ে হাসপাতালে ফিরে এসে ওই আয়ার খোঁজ শুরু করতেই প্রকাশ্যে আসে গোটা ব্যাপারটি। সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন ওই রোগীর বাবা বাবলু হাজরা।
রোগী পরিজনেদের দাবি, কিছু ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও, এ রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। রক্ত থেকে কফ, যে পরীক্ষা হাসপাতালে নিখরচায় হয় সেই পরীক্ষা বাইরে থেকে বেশি টাকায় করানো হচ্ছে। এই কারবারে ওয়ার্ডে থাকা আয়া বা হাসপাতালের বাইরে থাকা গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যাণ্ডের কর্মীদের একাংশ জড়িত বলেও অভিযোগ তাঁদের। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কুণালকান্তি দে বলেন, ‘‘সরকার যেখানে রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরিষেবা দিচ্ছে, সেখানে হাসপাতালের মতো জায়গায় এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত চিন্তার। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে কারবার বন্ধ করতে পদক্ষেপ করা হবে।’’