গয়না ফেরালেন গ্রিল-মিস্ত্রি প্রভাত

সেই কাজ করতে গিয়েই আলমারির লকারে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া বেশ কিছু গয়না নজরে পড়ে মিস্ত্রির। সঙ্গে সঙ্গে দিদিমণিকে ডেকে সেগুলি দেন। বৃহস্পতিবার মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েতের দীর্ঘসোঁয়া গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৯
Share:

প্রভাত বজর। নিজস্ব চিত্র

পুরনো আলমারি রং আর মেরামতির জন্য তা স্থানীয় গ্রিল কারখানায় দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। সেই কাজ করতে গিয়েই আলমারির লকারে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া বেশ কিছু গয়না নজরে পড়ে মিস্ত্রির। সঙ্গে সঙ্গে দিদিমণিকে ডেকে সেগুলি দেন। বৃহস্পতিবার মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েতের দীর্ঘসোঁয়া গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

এই ঘটনার পরে প্রভাত বজর নামে বছর চল্লিশের ওই মিস্ত্রিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কাশেমনগর এনএজে উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা ইন্দিরা গোস্বামী। ইন্দিরাদেবী বলেন, ‘‘ওই প্যাকেটটা নজরে পড়েনি। প্যাকেটের ভিতর অন্নপ্রাশনের সময়ে পাওয়া মেয়ের কয়েকটি সোনার আংটি, আমার দু’টি সোনার দুল, রূপোর হার ছিল। সব মিলিয়ে প্রায় লাখখানেক টাকার জিনিস ছিল।’’ কিন্তু এই কাজ করে প্রভাতবাবুর একটাই মন্তব্য, ‘‘কী আর করেছি, মানুষ হিসেবে এটাই তো করার কথা।’’ সেই সঙ্গে প্রভাতবাবু নিজের জীবনের কথা বলেন। তিনি জানান, খুব অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। অর্থাভাবে সপ্তম শ্রেণির পরে আর পড়াশোনা হয়নি। তখন সাত জনের সংসারের হাল ধরতে ‘অন্যের বাড়িতে বাগালি করেছি, মুনিষ খেটেছি’, বলেন প্রভাত। পরে কাজ শিখে এই কারখানা খোলেন। সেখানে এখন চার জন কাজও করেন। এই মুহূর্তে প্রভাতবাবুর বাড়িতে রয়েছেন আট জন। এক ভাই গ্রামে ব্যবসা করেন।

বৃহস্পতিবার এই ঘটনার পরে কারখানায় চলে রসগোল্লা খাওয়াও। পঞ্চায়েত প্রধান নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘প্রভাত ওই জিনিসগুলি ফিরিয়ে সততার নজির রেখেছেন।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন