কাটোয়া হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ পরিদর্শনে প্রশাসনের কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
‘আপনি মাটিতে কেন? বেড কোনটা?’— সদ্যোজাতকে কন্যাকে নিয়ে মেঝেতে শুয়ে থাকা এক বধূকে দেখে প্রশ্নটা করলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রণব রায়। শনিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এমনই দৃশ্যের সম্মুখীন হলেন প্রণববাবু। পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলাতে দিলেন প্রতিশ্রুতিও।
শনিবার দুপুরে ৩৫টি প্যাথলজিক্যাল ল্যাব, বেসরকারি নার্সিংহোমের প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে পুরসভার উত্তরণ হলে বৈঠকে বসেন প্রণববাবু, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকর্তা কবিতা শাসমল, মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি। সূত্রের খবর, বৈঠকে ল্যাবগুলির লাইসেন্স, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, টীকাকরণ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়।
বৈঠকে লাইসেন্সহীন ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান প্রশাসনের কর্তারা। সূত্রের খবর, শহরজুড়ে প্রায় ৭০টি লাইসেন্সহীন ল্যাব ব্যবসা চালাচ্ছে। এই ল্যাবগুলির দেওয়া ভুল রিপোর্টে প্রায়শই রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা বিভ্রান্ত হচ্ছে বলে জানান এক চিকিৎসক। এ দিন প্রণবাববু জানান, এমন লাইসেন্সহীন ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ঝটিকা পরিদর্শন শুরু করবে একটি কমিটি। সেই কমিটির মাথায় থাকবেন সহ স্বাস্থ্য আধিকারিক। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এ দিন তিনটি এক্স-রে ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠক সেরে প্রশাসনের কর্তারা কাটোয়া হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সেখানে প্রসূতি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় ৫৪টি শয্যা আছে। কিন্তু রয়েছেন ৯৪ জন মা। প্রশাসনের কর্তারা দ্রুত শয্যা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে খবর।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালের কাজে ফাঁকি দিয়ে বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র গেলে, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও বার্তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে অপরাশেন থিয়েটারের যে ঘরটিতে আগুন লেগেছিল, সেটিও দ্রুত সংস্কার করা হবে বলে এ দিন জানানো হয। হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান প্রণববাবু।