Coronavirus

সমন্বয়ের ‘অভাব’, ফের নেমে পড়লেন বহু যাত্রী

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বেঙ্গালুরু-মালদহ ট্রেন দুর্গাপুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০১:৫৩
Share:

জেলা ভাগ করে লাইন দিয়ে বসানো হয়েছে যাত্রীদের। দুর্গাপুর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

দিন-তিনেক আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল সোমবারও। ঘটনাস্থল সেই দুর্গাপুর স্টেশন। এ দিন সকালে দুর্গাপুর স্টেশনে ইঞ্জিন বদলাতে থামে বেঙ্গালুরু-মালদহ ট্রেন। নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে নেমে পড়লেন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শ’দেড়েক যাত্রী। দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এর পরে বাস ও গাড়িতে করে তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই বিশৃঙ্খলার জন্য রেল ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করেছেন যাত্রীদের একাংশ।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘ট্রেনটি আসার আগাম খবর প্রশাসনের কাছে ছিল। এই ট্রেন থেকে দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা স্টেশনে নেমে পড়তে পারেন, তা আগে থেকেই আঁচ করেছিল প্রশাসন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া ছিল।’’ প্রশাসনের দাবি, আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া ছিল বলে এ দিন তাই ১৪ তারিখের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সে দিন বেঙ্গালুরু থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী ট্রেন দুর্গাপুরে ইঞ্জিন বদল করতে এলে রেলপুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোর করে দুর্গাপুর স্টেশনে নেমে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মোট ৫৭ জন যাত্রী। এই ট্রেন আসার কোনও খবর মহকুমা প্রশাসনের কাছে ছিল না বলে দাবি। তাই ছিল না আগাম কোনও প্রস্তুতি। তবে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। রেলের এক কর্তা সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ মানেননি। তিনি দাবি করেন, স্টেশনে নামা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বেঙ্গালুরু-মালদহ ট্রেন দুর্গাপুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে। শুরু হয় ইঞ্জিন বদলের প্রক্রিয়া। এই সময়ে দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা নেমে পড়েন ট্রেন থেকে। যাত্রীদের দাবি, ট্রেনটি স্টেশনে ঢুকতেই রেলের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, যাঁরা নামতে চান তাঁরা নেমে যেতে পারেন। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে থাকা রেলপুলিশের কর্মীরা তাঁদের ফের ট্রেনে ওঠার নির্দেশ দেন। তা নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কয়েকজন ট্রেনে উঠে যান। তবে প্রায় ১৫৭ জন যাত্রী শেষ পর্যন্ত আর ট্রেনে ওঠেননি। খবর পেয়ে প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট সব দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা স্টেশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

Advertisement

ট্রেনযাত্রী বীরভূমের মাড়গ্রামের ফজলে আজিজ আব্বাসি বলেন, ‘‘কর্নাটক থেকে যে-যে রাজ্য হয়ে এসেছি, সব জায়গায় নির্বিঘ্নে যাত্রীরা নেমেছেন। কিন্তু এই রাজ্যে ঢোকার পরে থেকেই শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি। খড়্গপুরের কাছে একটি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ায়। স্থানীয় যাত্রীদের নামতে দেওয়া হয়নি। তার পরে আসানসোলেও একই পরিস্থিতি হয়। দুর্গাপুরে এক বার নামতে বলা হয়। তার পরেই ফের বলা হয় উঠে পড়তে।’’ তাঁর প্রশ্ন, দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা কেন বাড়ি ফিরতে আরও দেড় দিন কষ্ট করবেন? রাজ্যের হেল্প লাইনে ফোন করে অপমানজনক কথাবার্তাও শুনতে হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।

রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্গাপুর স্টেশনে সমন্বয়ের অভাবে সামান্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে দ্রুত তা মিটে যায়।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘রেল ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়াতে হবে, যাতে ফের এমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়। রেলের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ তিনি জানান, দক্ষিণবঙ্গের কিছু যাত্রী তাঁদের সুবিধার জন্য দুর্গাপুরে নেমে পড়তে পারেন, রেলের তরফে এমন কথা জানিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল প্রশাসনকে। এ দিন পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও নদিয়া, বাঁকুড়া, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি প্রভৃতি জেলার বাসিন্দারা নামেন দুর্গাপুরে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে যাত্রীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন