Fuel

ক্ষতিপূরণের ‘জটে’ থমকে পাইপলাইন পাতার কাজ

বেশ কিছু দিন ধরে কাজ আটকে থাকায় প্রকল্প রূপায়ণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা আইওসি প্রশাসনকে চিঠি লেখে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ১১:২৫
Share:

কয়েক বছর আগে, মাটির নীচ দিয়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইনের জন্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু মাটির নীচ দিয়ে পাইপলাইন বসানোর সময় অন্য এলাকার সঙ্গে ফসলের ক্ষতিপূরণে সামঞ্জস্য আনার দাবিতে চাষিরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তার জেরে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ব্লকের কৈয়র পঞ্চায়েতের গোপালপুরে ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

বেশ কিছু দিন ধরে কাজ আটকে থাকায় প্রকল্প রূপায়ণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা আইওসি প্রশাসনকে চিঠি লেখে। খণ্ডঘোষ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা গোপালপুরে গিয়ে সোমবার আন্দোলনকারী চাষিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাতেও জট কাটেনি। বিডিও (খণ্ডঘোষ) সত্যজিৎ কুমার বলেন, “আলোচনার ভিত্তিতে সহমত না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। সে জন্য মাটির তলা দিয়ে পাইপলাইন বসানোর কাজ ফের শুরু করা যায়নি।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা কয়েক বছর আগে, মাটির তলা দিয়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে হলদিয়ায় পৌঁছবে। সে জন্য কয়েক বছর আগে খণ্ডঘোষ ব্লকের পাঁচটি মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হয়। চারটি মৌজায় পাইপলাইন বসানোর কাজ নিয়ে কোনও সমস্যা না হলেও, গোপালপুর মৌজার চাষিরা ফসলের ‘যথাযথ’ ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

Advertisement

চাষিদের একাংশের দাবি, ফসলের ক্ষতিপূরণের বাবদ অন্য মৌজায় প্রতি বর্গ মিটারে ২৪০ টাকা দেওয়া হলেও, গোপালপুর মৌজার চাষিদের একাংশকে প্রতি বর্গ মিটারে ৬০-৭৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়েই তাঁরা আপত্তি জানিয়েছেন।

আন্দোলনকারী চাষিদের মধ্যে এমদাদুল হক মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘ক্ষতিপূরণ নিয়ে ঠিকঠাক কোনও তথ্য না দিয়েই প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থা কৈয়ড় ও গোপালপুর মৌজায় পাইপলাইন বসানোর জন্য চাষের জমি খুঁড়ে কাজ শুরু করে। গভীর ভাবে মাটি খুঁড়ে চাষের জমি লন্ডভন্ড করে দেওয়ায় প্রতিবাদ জানানো হয়।’’ চাষিদের দাবি, সঠিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া দূরের কথা, চাষের জমিও ঠিক করে দেওয়া হয়নি। সে জন্য ফের চাষ করতে গিয়ে, তাঁরা বিপাকে পড়েন। তাঁরা চান, সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণের সামঞ্জস্য রাখুক ওই সংস্থা।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামে গিয়ে আলোচনায় বসা হয়। খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থার প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। ফসলের ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনার সময়ে সংস্থার প্রতিনিধিরা চাষিদের দাবি মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু এক চাষি রেলের জমিতে ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য আরও বেশি টাকা দেওয়া হয় বলে দাবি করায়, আলোচনা ভেস্তে যায়। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুব্রত দুবের প্রতিক্রিয়া, “প্রশাসনিক কর্তারা বিষয়টি দেখছেন।’’ ওই এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য অপার্থিব ইসলামের দাবি, “ক্ষতিপূরণের সমস্যা না মিটলে, পাইপলাইন বসানোর কাজ দ্রুত শেষ করতে গিয়ে সমস্যা দেখা দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন