উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপ। নিজস্ব চিত্র
দূরপাল্লার বাস দাঁড়ানোর পরেই যাত্রীরা দোকানে খেতে যেতেন। তখনই উধাও হয়ে যেত বাসে রেখে যাওয়া ল্যাপটপ-সহ নানা সামগ্রী। যখন তাঁরা বুঝতে পারতেন, জিনিস খোয়া গিয়েছে ততক্ষণে বাস শক্তিগড় থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি ল্যাপটপ খোয়ানো এমন দুই যাত্রী শক্তিগড় ফাঁড়িতে অভিযোগ জানান। তার তদন্তে নেমে সোমবার ভোরে পুলিশ বর্ধমান স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে এক জনকে। তার কাছ থেকে মিলল পাঁচটি ল্যাপটপ এবং চারটি চার্জার।
জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, ধৃত বিশ্বনাথ গোস্বামীর বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের লাউদোহার প্রতাপপুরে। তাকে ধরার জন্য ওঁত পেতে বসেছিলেন জেলা পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা। ধৃত ব্যক্তি ওই ল্যাপটপগুলি বর্ধমানে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছিল। আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানার জন্য ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে।
বর্ধমান থানা সূত্রে জানা যায়, ৪ নভেম্বর শক্তিগড়ের ল্যাংচাহাবের কাছ থেকে ল্যাপটপ চুরি যায় বীরভুমের এক যুবকের। পর দিন তিনি পুলিশকে জানান, শক্তিগড়ের ল্যাংচাহাবে বাসটি দাঁড়ালে তিনি অন্য যাত্রীদের সঙ্গে খেতে নেমেছিলেন। বাস ছাড়ার ঠিক আগে উঠে পড়েন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাঁর নজরে পড়ে, ল্যাপটপের ব্যাগটি নেই। খোঁজাখুঁজির পরে কয়েকজন যাত্রী তাঁকে জানান, ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছরের একজন যুবককে ওই রকম ব্যাগ নিয়ে বাস থেকে নামতে দেখেছেন। এর কয়েক মাস আগেও একই ভাবে ল্যাপটপ খোয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন এক যাত্রী। এই অভিযোগ পাওয়ার পরে নড়ে বসে পুলিশ। বিশেষ দল গড়ে ল্যাপটপ চোরের খোঁজ শুরু হয়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খবর মেলে, দুর্গাপুর থেকে একটি দল ল্যাপটপ নিয়ে বর্ধমানে আসছে, ভোরে বর্ধমান স্টেশনের কাছে তা হাতবদল হবে। রবিবার গভীর রাত থেকে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল রাস্তায় টহল শুরু করে। ভোরে এক যুবককে দু’টি ব্যাগ হাতে স্টেশন চত্বরে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাকে চেপে ধরেন পুলিশ আধিকারিকেরা। দু’টি ব্যাগে ল্যাপটপগুলি উদ্ধার হয়। ধৃতকে সোমবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতকে জেরা করে জানা গিয়েছে, যাত্রী সেজে বাসে উঠে সুযোগ বুঝে ল্যাপটপ, মোবাইল হাতিয়ে মাঝপথে নেমে পড়ত সে।