পদত্যাগী যুবনেতা শুভম নিয়োগী। নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের আগে ধাক্কা খেল বর্ধমান বিজেপি। দলের বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা-এর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, একনায়কতন্ত্র চালানো-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করলেন দলের যুবনেতা শুভম নিয়োগী।
শুভম দলের বর্ধমান সদর জেলার যুব সভাপতি ছিলেন। তবে দিন কয়েক আগে সাংবাদিক বৈঠক করে শুভমকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান অভিজিৎ। এমনটাই দাবি করেছেন শুভম। যদিও পদ থেকে সরানোর বিষয়ে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুভমের কথায়, ‘‘আমি ১৭ বছর বয়স থেকে দল করছি। আমার বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা রয়েছে। দু’বার মিলিয়ে মোট ২৮ দিন জেল খেটেছি। কিন্তু বর্তমান সভাপতি দলের জন্য কিছু করেননি। তিনি ভয়ে নিজের বাড়ি বা ফ্ল্যাটে থাকেন না। নিজের ইচ্ছেমতো জেলা কমিটি বানিয়েছেন, সেখানে জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতারা স্থান পাননি। আমি অসহায় বোধ করছি। তাই সে কারণেই জেলা যুব সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।’’
দলের বর্তমান জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে পথে নামবেন বলে ঘোষণা করেছেন শুভম। শুভমের আরও অভিযোগ, বর্ধমানে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক থাকলেও সেই সম্প্রদায়ের কাউকেই নতুন জেলা কমিটিতে রাখা হয়নি। শুভমের বিদ্রোহ নিয়ে অবশ্য অভিজিৎ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বর্ধমানের মতো দ্বন্দ্বের আবহ বাঁকুড়া বিজেপি-তেও। বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলার সভাপতির পদত্যাগের দাবি তুলে এ বার পোস্টার পড়েছে তালড্যাংরা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। ওই পোস্টার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
পুরভোটের মুখে দিন কয়েক আগে দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল এবং বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন বিজেপির ছাতনা এক নম্বর মণ্ডলের সভাপতি-সহ মোট ১৪০ জন নেতা-কর্মী। পাশাপাশি বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহকে সরানোর দাবিতেও পোস্টার পড়ে বিষ্ণুপুর। এর রেশ কাটতে না কাটতে তালড্যাংরা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বদলের দাবিতে পোস্টার পড়েছে।
সুনীলের কথায়, ‘‘বিভ্রান্তি তৈরির উদ্যেশ্যে তৃণমূল এমন ঘৃণ্য রাজনীতি করছে।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরা কথায়, ‘‘বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ এখন মাঠে ময়দানে নেমে এসেছে। এই পোস্টার তারই প্রমাণ। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’