বাড়ির প্রতি সদস্যকে ‘স্বাস্থ্য কার্ড’

স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলার প্রতিটি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রেই রোগ সংক্রান্ত নানা তথ্য, নিয়ন্ত্রণের উপায় জানিয়ে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১১
Share:

আগে ও পরে, বাগিলা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

‘সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে’ ঢোকার মুখে এক দিকে বড় বড় করে লেখা রয়েছে, ‘ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে’ রাখুন। নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কী কী করা করা সে পরামর্শও দেওয়া রয়েছে। আর এক দিকে লেখা রয়েছে, ‘ক্যানসার প্রতিরোধ করুন’। তার নীচে কোন কোন কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে তাও রোগীদের জানানো হয়েছে।

Advertisement

এই ছবি মেমারি ১ ব্লকের বাগিলা সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলার প্রতিটি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রেই রোগ সংক্রান্ত নানা তথ্য, নিয়ন্ত্রণের উপায় জানিয়ে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে। মূল দরজার দু’পাশের লেখা মানুষের চোখেও পড়ছে সহজে।

এ ছাড়াও এক একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রাম বা পাড়ায় যাওয়ার জন্য আশা, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে দল গড়া হচ্ছে। তাঁরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সদস্যদের নাম ধরে শারীরিক অসুবিধার খোঁজ নিচ্ছে। সেগুলি লিপিবদ্ধ করছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “প্রতিটি বাড়িতে সদস্যদের নাম দিয়ে একটি করে স্বাস্থ্য-কার্ড দেওয়া হচ্ছে। ওই সব কর্মীরা সেখানে সদস্যদের শরীর সংক্রান্ত নানা বিষয় লিখে রাখছেন। পরে সেগুলি তুলনা করে কোনও অসুবিধার কথা বুঝতে পারলে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।’’

Advertisement

টীকাকরণের সঙ্গে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, এমনকি ক্যানসার নির্ণয় শুরু হয়েছে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। দায়িত্বে থাকা নার্সেরা জানান, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি সপ্তাহে দু’তিন দিন খোলা থাকত। সেখানে মূলত শিশু, প্রসূতি ও গর্ভবতীদের টিকা দেওয়া হত। এখন যেমন অতিরিক্ত পরিষেবা মিলছে, তেমনি সরকারি ছুটি ও রবিবার বাদে সব দিনই খোলা থাকছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে বাড়ছে রোগীদের ভিড়। বাগিলা, গলসি ১ ব্লকের উচ্চগ্রাম, রামগোপালপুর, আউশগ্রাম ২ ব্লকের এড়ালের মতো সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭৫ জন রোগী আসছেন, বলেও তাঁদের দাবি।

বাগিলা গ্রামের শেখ মান্নান, সিদ্ধেশ্বর পালদের দাবি, “রক্ত পরীক্ষার জন্য তো বটেই, রক্তচাপ মাপার জন্যেও মেমারি ছুটতে হত। এখন হাতের কাছেই সুবিধা মিলছে।’’ আউশগ্রামের অভিরামপুরের হিমাংশু মণ্ডল, জয়রামপুরের রবীন্দ্রনাথ ঘোষদের দাবি, “স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করছেন। ৩০ বছরের বেশি যুবক বা তরুণীদের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। মানুষজনও সচেতন হচ্ছেন।’’

গলসি ১-এর বিএমওএইচ ফারুক হোসেন বলেন, “এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরে থাকবেন। ফলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগগুলি আগেই ধরা পড়বে। চিকিৎসাও অনেক আগে থেকে শুরু করা সম্ভব হবে।’’

তবে এখনও অনেক কেন্দ্রেই বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। জেলার এক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে পাঁচ বছর সময় দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে উন্নীত করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন