বর্ধমানের সভায় অমিত শাহ। ছবি: উদিত সিংহ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় তিনটি সভায় রাজ্যের উন্নয়নের কথা বলে যাওয়ার পরে বর্ধমানে এসে সেই উন্নয়ন নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তিনি দাবি করেন, যেখানেই ঘুরছেন, মানুষের মন তিনি পড়তে পারছেন। সকলেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভেবে ফেলেছেন।
এ দিন শহরের উৎসব ময়দানে দলের বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সমর্থনে ‘বিজয় সংকল্প সমাবেশ’ নামে সভার আয়োজন করে বিজেপি। বিকেলে সেখানে আসার কথা ছিল অমিত শাহের। কিন্তু তিনি এসে পৌঁছন বেশ কিছুটা দেরিতে। বিকেল প্রায় ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছে দেরির জন্য রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উপরেই দোষ চাপান তিনি। তাঁর দাবি, এ দিন এর আগে যে তিন জেলায় তাঁর সভা ছিল, সেখানে হেলিকপ্টারে জ্বালানি ভরতে দেওয়া হয়নি। তাই কাজী নজরুল বিমানবন্দরে গিয়ে জ্বালানি ভরে সভাস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। দেরি হয়ে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারের বদলে সড়কপথে ফিরতে হবে বলেও জানান তিনি।
এর পরে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন শাহ। জনতার দিকে একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘‘বাংলায় শিক্ষা আছে? স্বাস্থ্য পরিষেবা? রোজগার পাওয়া যায়?’’ তাঁর দাবি, যেখানেই সভা করতে যাচ্ছেন, সকলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে আবার বেছে ফেলেছেন বলে বুঝতে পারছেন। গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই এর কারণ বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, বিজেপি সরকার সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে কোনও আপস না করার নীতি গ্রহণ করেছে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শাহ।
এ দিনের সভায় অহলুওয়ালিয়া ছাড়াও ছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ, দলের জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী প্রমুখ। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে দলের প্রার্থীকে জেতানোর ডাক দেন শাহ। সভা উপলক্ষে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে ভরে গিয়েছিল উৎসব ময়দান। পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা ও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত রাখা হয়েছিল।
অমিত শাহের বক্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের প্রতিক্রিয়া, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝেই এ সব কথা বলছেন ওঁরা।’’ জ্বালানি ভরা নিয়ে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দলের নেতারা।