তিন দিনের ভাসানে শব্দে নাকাল কালনা

কালীপুজোর পর থেকে টানা তিন গভীর রাত পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজিয়ে রাস্তায় নাচগান চলছে, অথচ স্থানীয় প্রশাসনের হুঁশ নেই— এমনই অভিযোগ কালনার বাসিন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

নার্সিংহোমের সামনে চলছে বক্স বাজিয়ে নাচ। নিজস্ব চিত্র।

কালীপুজোর পর থেকে টানা তিন গভীর রাত পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজিয়ে রাস্তায় নাচগান চলছে, অথচ স্থানীয় প্রশাসনের হুঁশ নেই— এমনই অভিযোগ কালনার বাসিন্দাদের। তাঁদের ক্ষোভ, নার্সিংহোমের পাশ দিয়েও রাত দেড়টা অবদি চলেছে বক্স বাজিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা।

Advertisement

বছর পাঁচেক আগেও কালনায় কালীপুজোর ভাসানে এমন ছবি দেখা যেত না। কিন্তু পুজোর সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিসর্জনের আড়ম্বর অনেকটাই বেড়েছে দিনে দিনে। অনেক সময়, শোভাযাত্রার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিও নেওয়া হয় না বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানান, অনেক পুজো উদ্যোক্তারাই রাতে মাইক, সাউন্ড বক্স না বাজানোর নিয়মের তোয়াক্কা না করে শোভাযাত্রা বের করেছে। বিশেষত, মঙ্গলবার রাত দেড়টা পর্যন্ত কান ঝালাপালা করা বাজনার সঙ্গে শোভাযাত্রায় রাস্তা জুড়ে নাচ চলেছে বলে তাঁদের অভিযোগ। দেখা গিয়েছে, শাহু সরকার মোড়ে নার্সিংহোমটির পাশ দিয়ে একের পর এক শোভাযাত্রা গিয়েছে। সাউন্ড বক্স, মাইকের, নাচের সঙ্গে প্রকাশ্যে মদ্যপান করতেও দেখা গিয়েছে কয়েকজনকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে উদ্দামতা। বকুলতলা এলাকায় দু’দলের মধ্যে ঝামেলাও বাধে। কাচের বোতলে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে হয়। চকবাজার, পুরনো বাসস্ট্যান্ড-সহ বেশ কিছু জায়গায় রাত ন’টার পরে যানজটও হয়। কয়েকটি রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় টোটো চলাচল।

শহরের বাসিন্দা কল্পনা পালের কথায়, ‘‘দশটার পরে মাইক না বাজানোর নিয়ম খাতায়-কলমেই রয়ে গিয়েছে। বাজনার আওয়াজে বাড়িতে টেকা দায় হয়ে গিয়েছে।’’ আর এক প্রবীণই বাসিন্দা বলেন, ‘‘পুলিশকে ফোন করলেও সবসময় লাভ হয় না। অগত্যা দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকতে হয়েছে।’’ প্রশ্ন উঠেছে পুজোর আগে প্রশাসনিক বৈঠক নিয়েও। প্রতিবার পুজোর আগে উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করে নিয়ম কানুন জানানো হলেও কাজের ক্ষেত্রে যে কিছুই মানা হয় না সে অভিযোগও তুলেছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

যদিও পুলিশের দাবি, মাত্রাছাড়া মাইকের দাপাদাপি বা শব্দদূষণের কোনও অভিযোগ আসেনি। আর নিয়ম না মেনে শোভাযাত্রার বিষয়ে মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘উৎসবে বাড়াবাড়ি চাইনি আমরা। তবে এ বার ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’ কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘শোভাযাত্রার বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন