মোবাইলে ছবি তুলতে সেনা ঘাঁটিতে, গ্রেফতার

উত্তরপ্রদেশের হিন্ডনের পরে পানাগড়ই হল দেশের দ্বিতীয় ও পূর্বাঞ্চলের প্রথম সুপার হারকিউলিস ঘাঁটি। চিন-ভারত সীমান্ত-সমস্যার জেরে গত কয়েক বছরে এই ঘাঁটিকে বিশেষ ভাবে ঢেলে সাজাচ্ছে বায়ুসেনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও কান্দি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পানাগড়ের অর্জন সিংহ বায়ুসেনা ঘাঁটির ভিতরে ঢুকে মোবাইলে ছবি তোলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক যুবককে। ধৃতের নাম, পরিতোষ দলুই। তাঁর বাড়ি, মুর্শিদাবাদের কেন্দা থানার গোবরহাটি গ্রামের মাঝপাড়ায়। তবে গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, ওই যুবকের মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই যুবক ঘাঁটির অনেকখানি ভিতরে ঢুকে প়়ড়ে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। অভিযোগ, ওই যুবকটি মোবাইল বের করে ছাউনির ভিতরের ছবিও তুলছিলেন। সেনা ঘাঁটির নিরাপত্তারক্ষীরা ওই যুবককে আটক করে জেরা করেন। কথাবার্তায় অসঙ্গতি মেলায় রাতে ওই যুবককে কাঁকসা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃতের কাছ থেকে একটি ভোটার পরিচয়পত্র মিলেছে। তা থেকেই তাঁর ঠিকানা জানা যায়। পুলিশ জানায়, ওই যুবক জেরায় জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদ থেকে বাসে চড়ে পানাগড়ে অন্য কাজে এসেছিলেন। তার পরে বিমান দেখতে সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়েন। শনিবার ধৃতকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ ওই যুবককে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। কেন তিনি বায়ুসেনা ঘাঁটির ভিতরে ঢুকেছিলেন, তা জানতে জেরা করা হবে।’’

উত্তরপ্রদেশের হিন্ডনের পরে পানাগড়ই হল দেশের দ্বিতীয় ও পূর্বাঞ্চলের প্রথম সুপার হারকিউলিস ঘাঁটি। চিন-ভারত সীমান্ত-সমস্যার জেরে গত কয়েক বছরে এই ঘাঁটিকে বিশেষ ভাবে ঢেলে সাজাচ্ছে বায়ুসেনা। বায়ুসেনার বেশ কিছু সুপার হারকিউলিস বিমান, সি ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস রয়েছে এই ঘাঁটিতে। এখানে রাতভর চলে প্রশিক্ষণ পর্বও। এ ছাড়া অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ওঠানামা করে। পানাগড়ের ঘাঁটিটিকে আরও শক্তিশালী করতে আরও প্রায় আটশো একর জমি দরকার। স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এ বিষয়ে জমি সমীক্ষার কাজও শুরু করেছেন বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বায়ুসেনা ঘাঁটিতে কী ভাবে ওই যুবক ঢুকে পড়লেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ জানান।

Advertisement

এর আগে ২০১৬-র মার্চে পানাগড় বায়ুসেনা ঘাঁটি লাগোয়া বৃন্দাবনপুরে এক বহিরাগত গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে বিমানঘাঁটি লাগোয়া জঙ্গলে লুকিয়ে পড়েন। মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে পুলিশ পাকড়াও করে। যদিও তদন্তে সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় কয়েক দিন জেল-হাজতে থাকার পরে ওই ব্যক্তি মুক্তি পান।

ধৃতের গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য দাবি করেন, ওই যুবকের মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওই যুবকের বাবা দিনমজুর। পরিবারের লোক জনের দাবি, মাঝেসাঝেই বাড়ি ছেড়ে চম্পট দেয় ওই যুবক। কিছু দিন আগেই কর্ণসুবর্ণ স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে চম্পট দেন ওই যুবক। কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত ত্রিবেদীরও দাবি, “পরিতোষ মানসিক রোগী। মাঝেসাঝে ট্রেনে চড়ে তিনি হাওড়া পর্যন্ত চলে যান। এ বার পানাগড় চলে গিয়েছেন। খবর পেয়ে পরিবারের লোক জন পানাগড়ে গিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন