প্রতীকী ছবি
প্রতি মাসে দেশি, বিদেশি মদ ও বিয়ার নিয়ে ১০০ কোটি টাকার বিক্রি হয় জেলায়। পুজোর সময়ে বা উৎসবের মাসে সেটাই গিয়ে ঠেকে দেড়শো কোটি টাকায়। কিন্তু গত কয়েকবছরের হিসেব এ বার মিলছে না। পূর্ব বর্ধমান আবগারি দফতরের দাবি, অন্য বছরের তুলনায় জেলায় মদ বিক্রির হার অনেকটাই কম। ফলে, রাজস্ব আদায়ও কম হচ্ছে।
দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট কামার জালিস বলেন, ‘‘গত বছরের চেয়ে ৪২ শতাংশ রাজস্ব আদায় ঘাটতি ছিল। সেপ্টেম্বরে সে ঘাটতি কিছুটা পূরণ হয়েছে। এখনও ২৭ শতাংশ ঘাটতি আছে। আশা করছি, পুজোর মরসুমে সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।’’ আবগারি দফতরের কর্তাদের দাবি, বিভিন্ন বারে বা ‘অন-শপ’-এ মদ্য পানের প্রবণতা এখন অনেকটাই কম। ফলে, বিক্রিও কম। আবার তুলনামূলক ভাবে দোকান থেকে মদ বিক্রিও কমের দিকে ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে সে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।
জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে পুজোর মাসে পূর্ব বর্ধমান প্রথম মদ বিক্রিতে ১০০ কোটি টাকায় পা রেখেছিল। বর্ষবরণের সপ্তাহে ১১৭ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল জেলায়। আবার ২০১৯ সালে পুজোর মাসে মদ বিক্রি ১৫০ কোটি ছুঁয়েছিল। আবগারি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত বছর পুজোর মাসে দেশি মদ (কান্ট্রি স্পিরিট) বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৩৬ কোটি টাকার। আর বিলিতি মদ (ফরেন লিকার) বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার। বিয়ার বিক্রি হয়েছিল ১৭ কোটি টাকারও বেশি। দফতরের কর্তারা জানান, গত বছর দেশি মদ বিক্রি ১৭ শতাংশ, বিলিতি মদ বিক্রি ২০ শতাংশ বেড়েছে। আর অস্বাভাবিক ভাবে বিয়ার বিক্রি বেড়েছিল ৫৫ শতাংশ। এক কর্তার কথায়, ‘‘বিয়ার বিক্রি বাড়ার জন্যই গত বছর ১৫০ কোটি টাকা ছোঁয়া গিয়েছিল। এ বার লকডাউনে বিয়ার বিক্রি বাড়েনি।’’
আবগারি দফতরের কর্তাদের দাবি, সকাল দেখে দিনটা কেমন যাবে, সব সময় যে ঠিক বোঝা যায় না, তার সব থেকে বড় উদাহরণ হল মদ বিক্রি। লকডাউনের দেড় মাস পরে ৪ মে মদের ‘অফ-শপ’গুলি খোলে। প্রথম দু’দিনেই প্রতিটি দোকানে ভিড় উপচে যায়। ভিড় সামলাতে পুলিশ পাহারা বসাতে হয়। দু’দিনেই জেলায় প্রায় দু’কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়। দফতরের দাবি, ওই ধারা বজায় থাকলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হত না। কিন্তু দেখা যায়, মে-জুন মাসে গড়ে ৫৮ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকায়। অগস্টে সেটাই কমে যায় ৭১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকায়। আবার সেপ্টেম্বরে ৯৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার মদ বিক্রি হয়। দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্টের দাবি, ‘‘মানুষের মনে করোনা-আতঙ্ক রয়েছে। সে জন্যে বারে বসে মদ্যপানের প্রবণতা কম। আশা করছি, উৎসবের মাসে রাজস্বে ঘাটতি পুষিয়ে যাবে।’’