বেহাল পুরনোটি, টাকা এল নতুন স্টেডিয়ামের

স্টেডিয়াম হবে আন্তর্জাতিক মানের। সে জন্য ইতিমধ্যে প্রায় তিরিশ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে। আসানসোল মহকুমার জন্য রাজ্যের এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটক। নতুন অর্থবর্ষে সেই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তকে অনেকে শহরবাসী স্বাগত জানালেও ক্রীড়াপ্রেমীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, আসানসোলের পুরনো স্টেডিয়ামটি বেহাল পড়ে থাকলেও সেটির সংস্কার না করে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি কতটা যুক্তিযুক্ত।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:০৫
Share:

এখানেই হবে নতুন স্টেডিয়াম।—নিজস্ব চিত্র।

স্টেডিয়াম হবে আন্তর্জাতিক মানের। সে জন্য ইতিমধ্যে প্রায় তিরিশ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়েছে। আসানসোল মহকুমার জন্য রাজ্যের এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটক। নতুন অর্থবর্ষে সেই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমন সিদ্ধান্তকে অনেকে শহরবাসী স্বাগত জানালেও ক্রীড়াপ্রেমীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, আসানসোলের পুরনো স্টেডিয়ামটি বেহাল পড়ে থাকলেও সেটির সংস্কার না করে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি কতটা যুক্তিযুক্ত।

Advertisement

আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সেনর্যালে এলাকায় একটি মাঠকে সম্প্রতি চিহ্নিত করা হয়েছে। মন্ত্রী মলয়বাবু জানান, সেখানে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য স্কেচ বানানো হয়েছে। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর অর্থ বরাদ্দ করেছে। এক সঙ্গে অন্তত ২০ হাজার দর্শক বসে খেলা দেখতে পারবেন, এমন স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে। কিন্তু আসানসোলে একটি স্টেডিয়াম থাকতে এত টাকা খরচ করে আর একটি গড়ার সিদ্ধান্ত কেন? মলয়বাবুর ব্যাখ্যা, “শুধু ক্রিকেটের জন্য আসানসোলে একটি স্টেডিয়াম গড়ার দাবি উঠেছে বহু দিন থেকে। সেই অর্থে শহরে ভাল মানের স্টেডিয়াম নেই। সব দিক বিবেচনা করে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” তাঁর দাবি, নতুন স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়ে গেলে সেখানে দেশের প্রথম সারির টুর্নামেন্ট-সহ নানা আসর বসানো যাবে। নানা প্রশাসনিক পদক্ষেপের পরে আসানসোলের গুরুত্ব বাড়ায় উন্নত স্টেডিয়াম তৈরিও জরুরি ছিল জানিয়ে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে শিল্পাঞ্চলের উঠতি খেলোয়াড়েরা উত্‌সাহ পাবে।

রাজ্যের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েও শহরের পুরনো স্টেডিয়ামটি নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, প্রায় ২০ বছর আগে পোলো মাঠে একটি স্টেডিয়াম তৈরি করেছিল তত্‌কালীন রাজ্য সরকার। কিন্তু সেটির কার্যত কোনও উন্নতি হয়নি। নিম্নমানের মাঠে কোনও মতে ক্রিকেট ও ফুটবলের প্রতিযোগিতা হয়। স্টেডিয়ামের চারপাশে এখনও পুরো দেওয়াল ওঠেনি। গ্যালারি তৈরির কাজও সম্পন্ন করা যায়নি। সাজঘরের পলেস্তরা খসে পড়ছে। শেষ কবে রঙ হয়েছে, মনে করতে পারেন না স্টেডিয়াম কমিটির কর্মকর্তারাই। নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা না থাকায় দুষ্কৃতীরা অবাধে ঢুকে দরজা জানালা ভেঙে নিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রায় দিনই সন্ধ্যায় এক দল দুষ্কৃতী স্টেডিয়ামে ঢুকে নানা অপকর্ম করে। স্টেডিয়াম কমিটির সম্পাদক অমল সরকার বলেন, “এই স্টেডিয়ামকে বাঁচাতে হলে আমূল সংস্কার দরকার। সরকারের কাছে আমরা দরবারও করেছি। পুরনোটির সংস্কার না করে আর একটি স্টেডিয়ামের জন্য অর্থ মঞ্জুর করা কতটা যুক্তিযুক্ত বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

পুরনো স্টেডিয়ামটি খোলনলচে বদলে সাজার দাবি উঠেছে শিল্পাঞ্চলের খেলোয়াড় মহলেও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জনের দাবি, ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ার উপক্রম হতেই তত্‌পর হয়ে আসানসোলের জন্য এমন ঘোষণা করছে রাজ্য সরকার। তাঁদের যুক্তি, ফুটবলের মরসুম শেষ হওয়ার পরে পুরনো স্টেডিয়ামেই ক্রিকেটের আসর বসানো যেতে পারে। আগে তৈরি স্টেডিয়ামটিই আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করা যেতে পারত। মন্ত্রী মলয়বাবুর অবশ্য দাবি, পোলো স্টেডিয়ামের সংস্কারের জন্যও রাজ্য সরকার চার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই কাজও শীঘ্র শুরু হবে।” স্টেডিয়াম কমিটির সম্পাদক অমলবাবু বলছেন, “না আঁচানো পর্যন্ত বিশ্বাস নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন