—প্রতীকী চিত্র।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরেন্সিক রিপোর্ট না মেলায় সময়মতো চার্জশিট দিতে পারে না পুলিশ, এমনটাই দাবি আইনজীবীদের। ফলে অনেক সময়েই মামলার কাজে প্রভাব পড়ে। সারা রাজ্যের মতো এই সমস্যা রয়েছে এই জেলাতেও। শেষমেশ এই সমস্যার সমাধানে দুর্গাপুরে আঞ্চলিক ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দিন কুড়ি আগে শঙ্করপুরে এর নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, খুন, ধর্ষণ-সহ বেশ কিছু অপরাধমূলক ঘটনায় ফরেন্সিক পরীক্ষার ফল তদন্ত ও মামলার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। কলকাতার বেলগাছিয়ায় রয়েছে ‘স্টেট ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি’র সদর দফতর।
কোনও অপরাধমূলক কাজ বা দুর্ঘটনার সময় ফরেন্সিক পরীক্ষার প্রয়োজন হলে এখান থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে নমুনা সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত নমুনা বেলগাছিয়ায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হয়। একাধিক মামলার তদন্তকারীদের দাবি, অনেক সময়েই দূরত্বগত কারণে বা যোগাযোগের অভাবে বিশেষজ্ঞেরা দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ফলে প্রমাণ লোপাট বা নষ্টের আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে, ধর্ষণের ক্ষেত্রে সিমেন বা স্পার্মের নমুনা যত বেশি দিন পড়ে থাকবে, পরীক্ষায় তা ধরা পড়ার সম্ভাবনা ততই কম। এরপর, ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেতে কালঘাম ছুটে যায় বলে অভিযোগ। বেলগাছিয়ার ওই গবেষণাগারে কর্মী সঙ্কট রয়েছে। উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়িতে ওই গবেষণাগারের একটি শাখা আছে ঠিকই। তবে সেখানে সব বিভাগ নেই। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক চাপ রয়েছে বেলগাছিয়ার গবেষণাগারটির উপরে।
ফলে বিলম্বিত হচ্ছে ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পেতে। এর জেরে বিচার প্রক্রিয়া দেরি হয়। অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার পথও সুগম হচ্ছে।
বাম আমলে উত্তরবঙ্গের মালদহ ও দক্ষিণবঙ্গে দুর্গাপুর, কল্যাণী, খড়গপুর ও হাওড়ায় পাঁচটি আঞ্চলিক ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু একটিও এ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। ২০০৯-১০ সালে এডিডিএ র্গাপুর শহরের ঠিক বাইরে জেমুয়া পঞ্চায়েতের শঙ্করপুরে দু’একর জমি গবেষণাগার তৈরির জন্য বরাদ্দ করে। শেষ পর্যন্ত ২০১৭-র ১৬ ডিসেম্বর সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করে ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউসিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। এর জন্য প্রাথমিক বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা।
দুর্গাপুরের গবেষণাগারটি চালু হলে দুই বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তদন্তের কাজে সুবিধা হবে।