n নবরূপে চাঁদের বিল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
দু’পাশে কাশবন। মাঝে বিলের টলটলে জলে ভাসছে বাহারি নৌকা। এক নৌকায় বাউলের সুর, অন্যটায় পুজোর গানে এক লহমায় উবে যাবে মনখারাপ, করোনা সংক্রমণের ভয়। পুজোর আগে পূর্বস্থলীর চাঁদের বিল সেজে উঠেছে এ ভাবেই।
পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগে চাঁদের বিলে পর্যটক টানতে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শনিবার প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার লম্বা বিল জুড়ে নৌকা-যাত্রা করা হয়। কচুরিপানায় মজে যাওয়া বিলের ভোলবদলে অবাক স্থানীয় লোকজনও। মন্ত্রী বলেন, ‘‘নির্জন বিলটির প্রাকৃতিক শোভা অপূর্ব। পর্যটকেরা এমনই এলাকা খোঁজেন।’’ তিনি জানান, আঁকাবাঁকা বিলের দু’পাশে তাল, সুপারি গাছ লাগানো হবে। পর্যটকদের কথা ভেবে তিনটি জায়গা থেকে বিশেষ নৌকা ছাড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর এলাকায় পাশাপাশি রয়েছে বাঁশদহ বিল এবং চাঁদের বিল। ইতিমধ্যেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য ঢেলে সাজা হয়েছে বাঁশদহ বিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চাঁদের বিলের দু’পাশে রয়েছে চাষের জমি। এঁকে বেঁকে যাওয়া নির্জন বিলে শীতে ভিড় করে পরিযায়ী পাখিরা। তবে বিলের জল কচুরিপানায় এতটাই ঢেকে গিয়েছিল যে চাষের জল পেতে সমস্যা হচ্ছিল কৃষকদের। সেচ দফতরের ১১ লক্ষ টাকায় সম্প্রতি বিল সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। বিলের প্রাকৃতিক শোভা কতটা উপভোগ্য হতে পারে তা বোঝার জন্য এ দিন বেশ কয়েকটি নৌকা রঙিন পতাকায় সাজিয়ে এক প্রান্ত থেকে শুরু হয় যাত্রা। একটি নৌকায় বাউল-সহ নানা লোকশিল্পীদের সঙ্গে ছিলেন স্বপনবাবু নিজে। অন্য আরও বেশ কয়েকটি নৌকায় বাজছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা পুজোর গান। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তা এবং এলাকার বিভিন্ন সংস্কৃতীপ্রেমী মানুষ ছিলেন সেগুলিতে। তাল গাছ থেকে তৈরি কয়েকটি ডিঙিও ভাসানো হয় জলে।
মন্ত্রী জানান, ধাপে ধাপে বিল ঘিরে আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সাঁতার প্রতিযোগিতার কথাও ভাবা হচ্ছে। দিলীপবাবুও জানান, দুই বিলেই পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। পর্যটকদের থাকা, খাওয়ার পরিকাঠামো রয়েছে বিলের আশেপাশে। করোনা-পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে সমস্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে, দাবি তাঁর।