রাস্তায় নো-এন্ট্রি, মিশ্র প্রতিক্রিয়া শহরবাসীর

বাস- গাড়ি থেকে রিকশা, মোটরবাইক, তার সঙ্গে থিকথিকে ভিড়— সবমিলিয়ে দমচাপা অবস্থা শহরের স্নায়ুকেন্দ্রটার। স্বাধীনতা দিবসের আগে সেই জটটাই হালকা করতে এক পা এগোল বর্ধমান পুরসভা। শহরের কার্জন গেট থেকে রানিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত অংশটিকে আপাতত সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ‘নো-এন্ট্রি’ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৫ ০১:৫২
Share:

ভোল বদলাবে এই রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।

বাস- গাড়ি থেকে রিকশা, মোটরবাইক, তার সঙ্গে থিকথিকে ভিড়— সবমিলিয়ে দমচাপা অবস্থা শহরের স্নায়ুকেন্দ্রটার। স্বাধীনতা দিবসের আগে সেই জটটাই হালকা করতে এক পা এগোল বর্ধমান পুরসভা। শহরের কার্জন গেট থেকে রানিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত অংশটিকে আপাতত সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ‘নো-এন্ট্রি’ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। পুরসভার দাবি, ওই এলাকার ব্যবসায়ী, স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে একদিকে যানজট কমবে, আর এক দিকে সৌন্দর্য বাড়বে শহরের।

Advertisement

তবে শহরবাসীদের মত দু’রকম। কেউ বলছেন, এ শহরকেও গ্যাংটকের এমজি মার্গের মতো করার চেষ্টা হচ্ছে। যেখানে গাড়ি-ঘোড়া চলে না, সাজানো রাস্তা সারি সারি বেঞ্চে বসে আনন্দে খানাপিনা বা চাইলে গানা-বাজানাও করা যায়। আবার অনেকে বলছেন, কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে যদি গাড়ি না চলে, তাহলে কী ভাল লাগবে? এও সেরকম। তবে ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা সবাই এই সিদ্ধান্তে খুশি নন। বর্ধমান ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক, চন্দ্রবিজয় যাদব জানান, ‘‘একেই বাস না ঢোকায় ব্যবসা মার খেয়েছে আমাদের। তার পরে টোটো-গাড়ি না চললে লোকই আসবে না।’’

এর সঙ্গেই শহরের কয়েকটি রাস্তা ‘ওয়ান-ওয়ে’ করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেমন, খোসবাগান থেকে বর্ধমান থানার পিছন দিক পর্যন্ত বিবি ঘোষ রোডের অংশ। এ ছাড়া চকদিঘি পেট্রল পাম্প থেকে রাধানগর পর্যন্ত এলাকা, ঢলদিঘি থেকে ক্ষুদিরাম মূর্তি পর্যন্ত রাস্তাও একমুখী করা হয়েছে। সেখানে শুধু দু’চাকার গাড়ি চলতে পারবে। রানিগঞ্জ বাজার থেরে রাজবাড়ি পর্যন্ত এলাকাতেও দু’চাকা চলবে।

Advertisement

এমনিতেই বিসি রোডের ওই অংশ হকারদের দখলে রয়েছে। যানজট, ছোটখাট দুর্ঘটনাও রোজকার ঘটনা। তার উপর রাস্তার এক পাশে মোটরবাইক, আর এক পাশে টোটো-রিকশা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকায় কুড়ি ফুটের রাস্তা কার্যত দাঁড়িয়েছিল চার ফুটে। হাঁটার জো ছিল না বলেও অভিযোগ শহরবাসীর। এমনকী পুলিশ তুলে দেওয়ার পরেও নতুন করে আবার ওই অস্থায়ী দোকানগুলি বসেছিল। ফলে যাতায়াত নিয়ে অভিযোগ ছিলই। তবে এ বারের পরিকল্পনা উতরে গেলে সমস্যা অনেকটাই কমবে বলে পুরসভার দাবি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কিংয়ের জন্য নতুন ব্যবস্থা করা হয়েছে। থানার পিছনে দু’চাকার গাড়ি ও সাইকেল থাকবে। তার সঙ্গে পার্কাস রোডেও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

তবে টোটো চালক শঙ্কর সাহা, রাধামাধব দাসরা বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরে জিটি রোড এলাকায় টোটো নিয়ে উঠতে পারছি না। বিসি রোডের উপর দিয়ে হাসপাতালে যেতাম। যাতায়াতের কষ্ট আরও বাড়ল। ভাড়ায় পোষাবে কি না চিন্তা করতে হবে।’’ একই কথা রিকশা চালকদেরও। তবে আশা ছাড়ছে না পুরসভা। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য শহরের কিছু অংশ নো-এন্ট্রি করা হয়েছে। সবাই সহযোগিতা করলে নতুন কিছু ভাবা হবে।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (পূর্ত) খোকন দাসও বলেন, ‘‘সবার সাহায্য পেলে ওই রাস্তাটি সৌন্দর্যায়নের ভাবনা রয়েছে। বাহারি আলো-গাছ লাগানো হবে, বয়স্কদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হবে।’’ তাঁর দাবি, এমনিতেই কার্জন গেট ঐতিহ্যবাহী স্থান। তার সঙ্গে এই রাস্তার সৌন্দর্য বাড়ালে সাধারণ মানুষেরও আকর্ষণ বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন