পঞ্চায়েত ভোট সামনেই। কিন্তু তার চূড়ান্ত দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। কিন্তু ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে অর্থ বরাদ্দ হওয়া সরকারি প্রকল্পগুলির কাজ যাতে থমকে না যায়, সে জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে খবর পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে। এমনকি, শুক্রবার ‘গুড ফ্রাই-ডে’ উপলক্ষে ছুটি থাকলেও জেলার বেশ কিছু পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে সরকারি আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের নানা প্রকল্পের গতি আনার বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু প্রকল্পেরই অর্থ বরাদ্দের পরে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সেগুলির দ্রুত ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ না করা হলে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ামাত্র সেগুলি আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আশঙ্কা থেকেই তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এ দিন পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিককে দেখা গেল নিজের দফতরে বসে কাজ করতে। তিনি বলেন, ‘‘নাদনঘাট, বগপুর-সহ ব্লকের চারটি জায়গায় ১০ লক্ষ টাকা খরচে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হবে। সেগুলির দরপত্র হয়ে গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর জন্যই এ দিন ছুটি সত্ত্বেও আমরা কাজ করছি। সোমবার ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ জারি হয়ে যাবে।’’
পূর্বস্থলী ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রেও জানা গিয়েছে, এলাকার ন’টি রাস্তার জন্য বস্ত্র দফতর সম্প্রতি ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। রবিবার ওই প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের। শিলান্যাসের পর্বের পরে দ্রুত যাতে কাজ শুরু হয়, সে বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা পরিষদের দাবি, এ বারে ১১৫টি রাস্তা তৈরির কথা ছিল। ভাতার, মেমারি, বর্ধমান ১-এ তিনটি রাস্তার পুনরায় দরপত্র ডাকার কারণে সেগুলির প্রক্রিয়া দ্রুত ভোট ঘোষণা হলে স্থগিত হয়ে যাবে। তবে বাকি রাস্তাগুলির কাজ চালু রাখার বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘আগেই চিঠি পাঠিয়ে পঞ্চায়েতগুলিকে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা সমস্ত অর্থ যাতে খরচ করা হয়, সে বিষয়ে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী তিন-চার মাস উন্নয়নের কাজে যাতে বাধা না হয়, সে বিষয়েও নজরদারি থাকছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রের খবর।
জেলা সভাধিপতি জানান, জেলায় ২ লক্ষ ২০ হাজার নতুন রেশন কার্ড এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত কার্ডগুলি বিলি করার। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘দ্রুত ভোট ঘোষণা হবে ধরে নিয়েই সমস্ত কাজ সেরে ফেলা হচ্ছে। যাতে নির্বাচনী বিধিতে আটকে না যায় উন্নয়নের কাজ।’’