এমনই হাল বর্ধমান শহরের নানা রাস্তার। নিজস্ব চিত্র
দুয়ারে পুজো। পাড়ায় প্যান্ডেলের বাঁশ বাঁধার শব্দ, মণ্ডপসজ্জার কাজ চলছে জোরকদমে। কিন্তু দেবী-দর্শন করতে দর্শনার্থীরা যে পথে আসবেন, তাইই খন্দে ভরা। পুজোর আগে বর্ধমান শহরের এই পথ-যন্ত্রণার উপশম হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে শহরবাসী। যদিও পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, যাঁর হাতে পূর্ত দফতরও রয়েছে, তাঁর দাবি, ‘‘আশা করি, পুজোর আগে সব রাস্তা সংস্কার হয়ে যাবে।’’ তবে এই ‘আশা’ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, দাবি বিরোধী থেকে শহরবাসীর একাংশ, সকলেরই।
খোসবাগানের মূল রাস্তা থেকে পুরপ্রধানের বাড়ি যাওয়ার পথের একাধিক জায়গায় পিচ উঠে গিয়েছে। শহরের আলমগঞ্জ, নতুনগঞ্জ, শিয়ালডাঙা, পুলিশ লাইন, খালাসিপাড়া, বাবুরবাগ, রসিকপুর, ইন্দ্রপ্রস্থ, সুভাষপল্লি, কলেজমোড়, নীলপুর, সৈনিক বোর্ড লাগোয়া, টিকরহাট, বোরহাট, মেডিক্যাল কলেজের সামনের পথও নানা জায়গায় বেহাল।
শহরের নানা পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি, মণ্ডপে যাওয়ার মূল রাস্তার একাধিক জায়গায় ছোট-ছোট খন্দ তৈরি হয়েছে। পুজোর ভিড়ে এমন খন্দ বিপত্তি তৈরি করতে পারে। পুজো কমিটির কর্তাদের আশঙ্কা, পুজোর রাস্তায় ‘জনসমুদ্র’ তৈরি হলে, এমন খন্দে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভুক্তভোগী টোটো চালক, সাইকেল ও মোটরবাইক আরোহীদের অভিযোগ, “বেশ কিছু রাস্তা বেহাল। এক পশলা বৃষ্টি পড়লেই ওই সব রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠে।” তাঁরাই জানান, নীলপুরের সৈনিক বোর্ডের পাশ থেকে জিটি রোডে অনুকূলবাবার আশ্রমের রাস্তাটি ছোট। কিন্তু তা খুবই ব্যস্ত রাস্তা। অথচ এই রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। তেমনই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে কলেজ যাওয়ার রাস্তাটির নানা এলাকায় খন্দ তৈরি হয়েছে।
শহরবাসীরা ছাড়া একাধিকবার তুলেছেন পুরপিতা পরিষদের সদস্য শিখা দত্ত সেনগুপ্ত-সহ একাধিক কাউন্সিলরও রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বারবার বলা সত্ত্বেও রাস্তা সংস্কার নিয়ে পুরসভা টালবাহানা করছে। সকলেরই দাবি, পুরসভার পূর্ত বিভাগের উচিত পুজোর আগেই রাস্তার ক্ষতে মলম লাগানো।
কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, “পুরসভা পুজোর আগে বেহাল রাস্তাগুলি সংস্কার করতে উদ্যোগী হচ্ছে না। বরং তাঁরা ভাঙা ত্রিফলা বসাতে বেশি উৎসাহী!” তাঁরা মনে করছেন, রাস্তা নিয়ে হইচই শুরু হলে পুরসভা ঘুম থেকে উঠে তড়িঘড়ি সংস্কারে উদ্যোগী হবে। তাতে টাকা যেমন জলে যাবে, তেমনই রাস্তার হালও ফিরবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বলে দাবি। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘রাস্তা সংস্কারের জন্য ২ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। হইচইয়ের আগেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’